Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সিউড়ি সংশোধনাগারে দ্রুত বিচার চেয়ে অনশন শুরু বন্দিদের

বন্দিদের দাবি, আদালত বার বার দিন ধার্য করলেও সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকছেন।

সিউড়ি সংশোধনাগারের ৪৫ জন বিচারাধীন বন্দি।  ছবি: সংগৃহীত।

সিউড়ি সংশোধনাগারের ৪৫ জন বিচারাধীন বন্দি। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০১
Share: Save:

হয় জামিন হোক বা দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হোক— এমনই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনশন শুরু করেছেন মাদক মামলায় (এনডিপিএস অ্যাক্ট) অভিযুক্ত সিউড়ি সংশোধনাগারের ৪৫ জন বিচারাধীন বন্দি। সংশোধনাগার সূত্রে এমনই খবর মিলেছে।

বন্দিদের দাবি, আদালত বার বার দিন ধার্য করলেও সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকছেন। তাই মামলাগুলির শুনানি হচ্ছে না। মিলছে না জামিনও। বন্দিদের বক্তব্য— বছরের পরে বছর এ ভাবে কেন জেলে বন্দি থাকতে হবে? মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চেয়ে তা-ই অনশনের পথই বেছেছেন তাঁরা। সিউড়ি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারও বিচারাধীন ওই বন্দিরা অনশনেই রয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আদলতকে জানানো হয়েছে।

সংশোধনাগার সূত্রে খবর, সিউড়ি আদালত থেকে এ দিনও সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে ফিরতে হয়েছে বিচারাধীন বন্দি নবদ্বীপের বাসিন্দা মতি শেখ ও বিশ্বজিৎ দাসকে। দু’জনের দাবি, দু’বছর আগে জেলা পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। তার পর থেকে জেলে রয়েছেন। আদালতে জামিন মিলছে না। সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়াও শেষ হচ্ছে না। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা দোষী হলে শাস্তি হোক। নির্দোষ হলে রেহাই মিলুক। এ ভাবে বাঁচা যায় না।’’ প্রায় একই বক্তব্য রামপুরহাট থানা এলাকা বছর দেড়েক আগে গ্রেফতার হওয়া আলি শেখ ও হাবল শেখের।

এমন পরিস্থিতির জন্যে আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকেই। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, মাদক মামলায় বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া প্রায় ৫০ জন অভিযুক্ত বর্তমানে রয়েছেন সিউড়ি সংশোধনাগারে।

প্রত্যেকেরই বিচার চলছে সিউড়ি এডিজে ফার্স্ট কোর্ট বা বিশেষ আদালতে। জামিন দেওয়া বা না দেওয়া আদলতের সিদ্ধান্ত। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে মূল সমস্যা হচ্ছে সাক্ষীদের অনুপস্থিতি।

অভিযুক্তদের আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যেহেতু বিভিন্ন থানার পুলিশই তাঁদের গ্রেফতার করেছে। সাক্ষ্য দিতে পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদেরই আদালতে আসার কথা। কিন্তু বিভিন্ন মামলায় বার বার আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কারণ দেখিয়ে সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকছেন। মামলা এগোচ্ছে না।’’ ওই আইনজীবী জানান— কেউ দু’বছর, কেউ এক বছর, কেউ বা ছ’মাস ধরে জেলে বন্দি। তিনি বলেন, ‘‘তার প্রতিবাদেই বিচারাধীন বন্দিরা অনশন শুরু করেছেন বলে জেনেছি।’’ জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলছেন, ‘‘আদালতের বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে এটুকু বলা, আদালত নির্দেশ দিলেই তা মেনে চলেন পুলিশকর্মীরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Prisoner সিউড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE