কেবল একটি ফোন নম্বর, আর তাতেই এক ধাক্কায় রাজস্ব আদায় বেড়ে হল তিন গুণ। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে আদায় হয়েছিল ১১ লক্ষের কিছু বেশি টাকার রাজস্ব। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে সেই আদায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ লক্ষেরও বেশিতে।
গ্রামে গ্রামে বা এলাকায় ঘুরে লোকজনের কাছে ফোন নম্বর দিয়ে আসার বিষয়টি যে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এ ভাবে কাজ করতে পারে সেটা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তাদের অনেকেই ভাবতে পারেননি। বছরের শেষে হিসেব মেলাতে গিয়ে কাশীপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের চোখ কপালে ওঠে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এবং অভিযান চালিয়ে জরিমানা বাবদ কাশীপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর গত আর্থিক বছরে ৩৩ লক্ষেরও বেশি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। সঠিক অঙ্কটা হল ৩৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ১০৫ টাকা।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশীপুর ব্লকের মাঝ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকেশ্বর ও বেকো নদী। দু’টি নদী মিলে মোট ঘাটের সংখ্যা ৯টি। দফতরের এক আধিকারিক জানান, গোপনে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে যাঁরা বালি বা পাথর তুলছে, খবর পেয়ে তাদের জরিমানা করে এই রাজস্ব এসেছে।
কিন্তু কী ভাবে সম্ভব হয়েছে সেটা?
দফতরের আধিকারিক কৌশিক সামন্ত বলেন, ‘‘এই রাজস্বের সবটাই জরিমানা বাবদ পাওয়া। অভিজ্ঞতায় দেখেছি আমরা কোনও জায়গায় বালি বা পাথর চুরি হচ্ছে খবর পেয়ে অভিযানে গেলে চক্রের লোকজন আগাম খবর চলে যায়। আমরা যাওয়ার আগেই সরে পড়ে। কিন্তু স্থানীয় মানুষ এই লুঠের বিরুদ্ধে। তাই অভিযানে গেলে এলাকার লোকজনকে আমার মোবাইল নম্বর দিয়ে আসতাম। ওই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপও রয়েছে।’’
আর সেই সিদ্ধান্তেই কাজ হতে শুরু করে। ওই আধিকারিক জানান, কোথাও এই ধরণের চুরি হলেই সঙ্গে সঙ্গে খবর চলে আসতে থাকে। অনেক সময়ে তিনি এলাকার বাসিন্দাদের বলেছেন গাড়ি ঘিরে রাখতে। তাঁরা সেটাও করেছেন।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘‘ওই আধিকারিক ভাল কাজ করেছেন।’’
আর যাঁর প্রশংসা করলেন তিনি, সেই আধিকারিক কৌশিকবাবু বলছেন, ‘‘এই ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব আদায়ে আমার ফোন নম্বরের থেকে দুর্নীতি বন্ধে সাধারণ মানুষের এগিয়ে আসা কম বড় ব্যাপার নাকি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy