Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
আড়শায় কমিটি গঠন করে যুবক খুনের তদন্ত দাবি

যুবক খুনে বাকিরা কেন অধরা? গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল

ঘটনার পরে ধরণীর বাবা সীতারাম সিং সর্দার পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে।

সরব: থানার পথে ‘নারী নিগ্রহ ও খুন সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’-র লোকজন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সরব: থানার পথে ‘নারী নিগ্রহ ও খুন সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’-র লোকজন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আড়শা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

ঘটনার পরে তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তার পরেও ধরণী সিং সর্দারের ‘খুনে’ এক জন ছা়ড়া অন্য কোনও অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করা গেল না, সেই প্রশ্ন তুলে সোমবার পথে নামল ‘নারী নিগ্রহ ও খুন সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি’।

আড়শায় এ দিন মিছিল করেন কেন্দুয়াডি ও লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। দুপুরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে আড়শা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কমিটির ব্যানারে মিছিল হয়, একটি বিক্ষোভ সভাও হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, অবিলম্বে বাকিদের গ্রেফতার করা না হলে তাঁরা আন্দোলনের মাত্রা চড়াবেন।

পরে কমিটির তরফে পুলিশের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ দাবি করেছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। আর ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি দুর্ঘটনা বলেই মনে হয়েছে। এই সমস্ত কথা এ দিন বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন এক পুলিশকর্তা। তিনি জানান, তদন্তের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২০ অক্টোবর, একাদশীর রাতে একটি অনুষ্ঠান দেখে আড়শা থেকে কেন্দুয়াডি গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন ধরণী। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী শিবানী সিং সর্দার ও বোন গঙ্গা সিং সর্দার। শিবানীর দাবি, আড়শা থেকে বেরনোর আগে ধরণী দোকান থেকে খাবার কিনছিলেন। সে সময়ে কয়েক জন তাঁদের উদ্দেশে আপত্তিকর কথা বলতে শুরু করে। ধরণী প্রতিবাদ করেন। সেখানেই একপ্রস্ত কথাকাটাকাটি হয়। আপাত ভাবে মিটেও যায়।

অভিযোগ, দু’টি মোটরবাইকে পিছু নিয়ে দুষ্কৃতীরা ধরণীদের পথ আটকায়। মারধর করতে করতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দূরে, অন্ধকারে। পরে গ্রামবাসী ধরণীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেন। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।

ঘটনার পরে ধরণীর বাবা সীতারাম সিং সর্দার পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। ধরণীর বোন গঙ্গাও দাবি করেছিলেন, তাঁর দাদাকে রাস্তা থেকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল চার জন। পুলিশ ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আড়শারই চিটিডি গ্রাম থেকে রবীন্দ্রনাথ মাহাতো নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে।

ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে আগেও পথে নেমেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এ বার তাঁরা কমিটি গড়ে উঠল। কমিটির তরফে সাগর আচার্য, পবন সিং সর্দাররা বলেন, ‘‘পুলিশ তো ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে কি কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি?’’ এ দিনের মিছিলে ছিলেন ধরণীর স্ত্রী, বোন এবং বাবাও।

পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ভূমিজ মুন্ডা কল্যাণ সমিতির রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মীনারায়ণ সিং সর্দার এ দিন বলেন, ‘‘কমিটির আন্দোলনের প্রতি আমাদেরও সমর্থন রয়েছে। আমরাও চাই দ্রুত দোষীদের শাস্তি হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE