রাসমঞ্চের সামনে। নিজস্ব চিত্র
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সংরক্ষিত মন্দিরগুলিতে ঢোকার জন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়ে বেশ কিছু পর্যটক হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন।
ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে বিষ্ণুপুরে পর্যটকদের আসা-যাওয়া। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে জোর দিচ্ছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ, তেমনই সংরক্ষিত মন্দিরগুলিতে ঢোকার জন্য টিকিট কাটার প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইন করে দেওয়া হয়েছে। আগে রাসমঞ্চের কাছে একটি টিকিট কাউন্টার ছিল। সেখান থেকে মন্দিরগুলিতে ঢোকার টিকিট কেটে নেওয়া যেত।
এখন জোড়বাংলা ও রাসমঞ্চের সামনে ‘কিউআর কোড’ দেওয়া থাকছে। মোবাইলে সেগুলি ‘স্ক্যান’ করে টিকিট কাটতে হচ্ছে পর্যটকদের। কিন্তু অনেকেই তাতে অসুবিধার অভিযোগ তুলছেন।
পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের বিষ্ণুপুর উপমণ্ডলের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ৬ জুলাই সরক্ষিত মন্দিরগুলি খুলে দেওয়া হলেও পর্যটকেরা আসছিলেন না। পুজোর সময় থেকে ছবিটা একটু একটু করে বদলাচ্ছে। এখন প্রতিদিন আটশো-ন’শো লোক হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারও সংরক্ষিত মন্দিরগুলিতে ভিড় হয়েছিল ভালই। হুগলি থেকে এসেছিলেন চন্দন রায় নামে এক সরকারি আধিকারিক। তিনি বলেন, “পর্যটকদের অনেকের স্মার্ট ফোন নেই। যাঁদের আছে, তাঁদের অনেকের আবার অনলাইনে টাকা লেনদেনের সুবিধা নেই। তাঁরা কী ভাবে টিকিট কাটবেন? বিকল্প কোনও ব্যবস্থাও রাখা দরকার ছিল।’’
এ দিন দেখা গেল, হুগলি থেকে সপরিবার আসা অর্পিতা শীল, বর্ধমানের প্রণয় রায়, সিঙ্গুরের প্রভাত বাউল বেশ চটপট মোবাইলে টিকিট কেটে রাসমঞ্চে ঢুকে পড়লেন। তবে চন্দননগর থেকে বেড়াতে আসা সুমনা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা সড়গড় নন, তাঁদের এই ব্যবস্থায় সময় অনেক বেশি লাগছে। অনেক সময়ে টাকা কেটে নিলেও টিকিট বেরোচ্ছে না। পরে হয়তো টাকা ফেরত মিলবে। কিন্তু অযথা হয়রানি হচ্ছে।’’
পর্যটকদের বিষ্ণুপুর ঘুরিয়ে দেখান বেশ কয়েকজন গাইড। তাঁদের মধ্যে অসিত দাস বলেন, “কিছু দিন আগে আমি কয়েক জনকে গাইড করছিলাম। তাঁরা টিকিট কাটতে না পারায় আমার মোবাইল থেকেই চেষ্টা করি। অ্যাকাউন্ট থেকে ১৪০ টাকা কেটে নিলেও টিকিট পাইনি।’’
এই পরিস্থিতিতে অনেক পর্যটক কুড়ি টাকার টিকিট সাইবার ক্যাফে থেকে তিরিশ টাকা দিয়ে কাটতে যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কর্তারা জানাচ্ছেন, টিকিট না মিললে কেটে নেওয়া টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে ফিরে যাবে।
পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে বিষ্ণুপুর উপমণ্ডলের সংরক্ষণ আধিকারিক (সিও) রোহিত কুমার অবশ্য সমস্যার কথা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, সবাই অনলাইনে টিকিট কাটতে পারছেন। অসুবিধা হলে রাসমঞ্চে থাকা স্থায়ী ও অস্থায়ী নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করছেন। নিজেদের মোবাইল থেকে সরাসরি টিকিট কাটার জন্য পর্যটকদের কাছে অনুরোধ করেছেন রোহিতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy