Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সহায় পুলিশ, হারানো ছেলেকে ফিরে পেলেন দম্পতি

নিখোঁজ ছেলেকে বাবা, মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল সদাইপুর থানার পুলিশ। গত রবিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় চা বাগানের শ্রমিক মার্টিন এবং রূপসী ওঁরাওয়ের বড় ছেলে বিশম বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন কলকাতা যাবেন বলে।

ফেরা: বাবা-মায়ের সঙ্গে বিশম। শুক্রবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

ফেরা: বাবা-মায়ের সঙ্গে বিশম। শুক্রবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
সদাইপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

নিখোঁজ ছেলেকে বাবা, মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল সদাইপুর থানার পুলিশ। গত রবিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় চা বাগানের শ্রমিক মার্টিন এবং রূপসী ওঁরাওয়ের বড় ছেলে বিশম বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন কলকাতা যাবেন বলে। সত্যিই যে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে হারিয়ে যাবেন ভাবতে পারেননি ওই দম্পতি। নিখোঁজ বিশমের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরলেও কোনও হদিশ দিতে পারেননি কেউ। কেটে গিয়েছে দু’দিন।

মঙ্গলবার রাতে সদাইপুরে অপরিচিত তরুণকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে সন্দেহ স্থানীয়দের। খবর যায় সদাইপুর থানায়। পুলিশ ওই তরুণকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে বুঝতে পারে কথায় অসঙ্গতি আছে। সদাইপুর থানার ওসি তরুণ চট্টরাজ নিজেও দীর্ঘক্ষণ ওই তরুণের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, তরুণ যে মানসিক ভারসাম্যহীন তা তাঁর আচরণেই স্পষ্ট ছিল। কোনও রকমে তাঁর কাছ থেকে নিজের নাম ও মামার ফোন নম্বর জানতে পারে পুলিশ। ফোনে যোগাযোগ করে মামার কাছ থেকে বাবা, মায়ের সন্ধান পান ওসি। বুধবার রাতে থানা থেকে ফোন পেয়ে ছেলের খোঁজে সদাইপুরে পৌঁছোন মার্টিনরা। তারপরের ঘটনা বলতে গিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আপ্লুত হন ওঁরাও দম্পতি।

মার্টিন বলেন, ‘‘পুলিশ অফিসারদের জন্যই ছেলেটাকে ফিরে পেলাম। ওঁরা ওকে যত্ন করে রেখেছিলেন। বছর কয়েক ধরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত বিশম। এর আগে কিছুদিন কলকাতায় একটি সাইকেল তৈরির কারখানায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল। কিন্তু তিন মাস বাদেই বাড়ি ফিরে আসে। তারপর থেকেই মাঝেমাঝে কলকাতা যাওয়ার কথা বলত।’’ সারাদিন ঘরেই থাকতেন। কখনও সখনও কিছু কাজ করতেন নিজের খেয়াল খুশি মতো। বছর আঠেরোর বিশমের মানসিক অসুস্থতার জন্যই ক্লাস এইটের পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি জানান তাঁর বাড়ির লোকেরা। কখনও কখনও উত্তেজিত হয়ে উঠতেন। রবিবার ১০০ টাকা পকেটে নিয়ে যে এভাবে আচমকা বাড়ি ছেড়ে ছেলে চলে যাবে ভাবেননি তাঁরা।

পুলিশ আধিকারিকেরা শুধু বাবা, মা-কে ছেলের খোঁজ দিয়েই দায় সারেননি। গাড়ি করে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে উত্তরবঙ্গের বাসেও বসিয়ে দেন। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘ভাল কাজ করেছে সদাইপুর থানা। পুলিশ নিয়ে একটা জড়তা থাকে অধিকাংশের। এমন কাজ করলে সেই বাধা দূর হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE