পুরুলিয়ার রবীন্দ্রভবনে। নিজস্ব চিত্র
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে চলতি আর্থিক বর্ষে ১ কোটি ২০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। গত আট মাসে শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ। অর্ধেক আরও বাকি। এ দিকে, হাতে সময় চার মাস। একশো দিনের কাজে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তাই বিশেষ সপ্তাহ উদ্যাপন শুরু করছে জেলা প্রশাসন। আজ, শনিবার থেকে সেই সপ্তাহ শুরু হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার।
আগামী সাত দিন ধরে জেলার সমস্ত ব্লক ও প্রতিটি পঞ্চায়েত বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে একশো দিনের কাজে। সে কারণেই তৈরি করা হয়েছে বর্ণাঢ্য ‘ট্যাবলো’। সাত দিন ধরে সে ‘ট্যাবলো’ ঘুরবে জেলার ব্লকগুলিতে। সেই সঙ্গে থাকছে পথনাটকের দল। তৈরি করা হয়েছে ‘থিম সং’। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আগে আমরা বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে আরও গতি আনতে বিশেষ সপ্তাহ পালন করেছি। এ বার সাত দিন ধরে একই কাজ করা হবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে।”
পুরুলিয়াতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে উন্নয়ন ও সরকারি প্রকল্পের কাজের হাল হকিকত দেখতে গিয়ে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের নজরে এসেছিল একশো দিনের কাজে কিছুটা হলেও খামতি থেকে যাচ্ছে। গ্রামে ঘুরে প্রশাসনের কর্তাদের অভিজ্ঞতা হয়েছিল, কাজের অভাবেই অনেকে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। সেই প্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার প্রান্তিক বাসিন্দাদের আরও বেশি মাত্রায় কর্মসংস্থান করা হবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে।
জেলাশাসক জানান, গত বছর পুরুলিয়াতে এই প্রকল্পে ৮৩ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি করা হয়েছিল। কাজ পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৩১ হাজার পরিবার। মজুরি বাবদ খরচ হয়েছিল ১৫২ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চলতি আর্থিক বর্ষে পুরুলিয়াতে ১ কোটি ২০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি করব। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার পরিবারকে কর্মসংস্থান
দেওয়া হবে।”
তবে আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক পূরণ হয়েছে। চার মাসে কি শেষ হবে? তাই প্রশাসনের সর্বস্তরকে গা ঝাড়া দিয়ে মাঠে নামানোর লক্ষ্যেই এই বিশেষ সপ্তাহ উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনেরএক কর্তার কথায়, ‘‘ধান কাটা প্রায় শেষের মুখে। এর পরে জেলা জুড়ে কাজের চাহিদা বাড়বে। এই সময়ে সকলে মিলে একযোগে মাঠে নামলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন নয়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আরও একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলায় থাকা সরকারি জমিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আর বিশেষ সপ্তাহে সেই কাজটাই করতে চাইছেন জেলাশাসক। সেই কারণেই শনিবার তিনি নিজে ঘুরবেন কাশীপুর ব্লক এলাকায়। রাহুলবাবু বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই অনেকটা কাজ করে ফেলেছি। কিন্তু আত্মসন্তুষ্টির কোনও জায়গা নেই। তাই আগামী এক সপ্তাহে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।”
সে কারণেই প্রতিটি পঞ্চায়েতকে দৈনিক চারশো শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলাশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy