প্রতীকী ছবি।
বছরখানেক আগে অবধিও তাঁর অভিনয় শহর বা শহরতলির বিভিন্ন মঞ্চে নাট্যপ্রেমী দর্শকদের হাততালি কুড়িয়েছে।
নাটকই ধ্যান জ্ঞান তাঁর। নাটকের জন্যই নিবেদিত প্রাণ রামপুরহাট বাজার পাড়ার সৈয়দ টুলুর। মঞ্চে অভিনয় করতে গিয়ে প্রান্তিক মানুষের জীবন সংগ্রামকে ফুটিয়ে তুলেছেন বহুবার। মঞ্চের চরিত্রগুলো যেন তাঁর নিজেরই প্রতিচ্ছবি। নিজেও লড়াই করছেন মারণ রোগ ক্যান্সারের সঙ্গে। মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। সৈয়দ টুলুর এই দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বীরভূমের সংস্কৃতি জগতের কয়েকজন।
রামপুরহাটের প্রবাহ নাট্যসংস্থার কর্ণধার প্রিয়ব্রত প্রামাণিক বলেন, ‘‘এই চিকিৎসার খরচ অনেক। তাই আমরা সমবেত হতে চাইছি সৈয়দ টুলুর পাশে দাঁড়াতে। রামপুরহাট, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, বোলপুর, লাভপুর, আমোদপুর-সহ জেলার সমস্ত এলাকার নাট্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সকলেই আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসার খরচ জোগাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে।’’ সম্প্রতি প্রবাহ’র পক্ষ থেকে অসুস্থ নাট্য কর্মীর চিকিৎসার জন্য ১১হাজার টাকা তাঁর হাতে দেওয়া হয়েছে। প্রিয়ব্রত জানান, সৈয়দ টুলুর চিকিৎসার জন্য কলকাতার বঙ্গ নাট্য সংহতি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের কাছ থেকেও সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে।
সত্তরের দশক থেকে নাটকের জগতে মিশে গিয়েছিলেন সৈয়দ টুলু। রামপুরহাটে তাঁর তৈরি নাটকের দল ‘অনামী’র প্রযোজনায় অসংখ্য নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে গত কয়েক দশকে। টুলু’র পরিচালনায়, পুতুল নাচের কাব্যি একাঙ্ক নাটকের ৮৬ তম প্রযোজনা রামপুরহাট-সহ জেলার নাট্যপ্রেমী মানুষদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে বারবার। তাঁর সহ অভিনেতারাও জানান, শূল ব্যথা, গাব্বু খেলা, সুবর্ণ গোলক, অগ্রদানি - এই সব পূর্ণাঙ্গ নাটকগুলিতে সৈয়দ টুলুর দক্ষ পরিচালনা এবং অভিনয় দর্শক কোনওদিন ভুলতে পারবেন না।
নিজের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না কোনও দিনই। কখনও ছোটোখাটো ব্যবসা করে কখনও আবার বেসরকারি সংস্থায় সামান্য বেতনের চাকরি করে নাটকের দল চালানো আর নিজের খাওয়া পরার খরচ জোগাতেন। দিন-রাত একটানা পরিশ্রম করে একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ করার পাশাপাশি নিজের নাটকের দলের উদ্যোগে প্রতি বছর নাট্যমেলা করেছেন। কখনও নাট্যমেলার খরচ জোগাড় করতে, কখনও শহরে সুস্থ সংস্কৃতির দাবিতে কখনও আবার ভাল নাটক দেখার আর্জি নিয়ে শহরের পথে হেঁটেছেন।
মাস কয়েক আগেও এক সংস্কৃতিকর্মীর অসুস্থতায় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বীরভূমের নাট্যকর্মীরা। এবার প্রবীণ এই মঞ্চ অভিনেতার অসুস্থতায় স্থানীয় মানুষজনের কাছে সাহায্যের আর্জি নিয়ে পথে নামছেন তাঁর সহ-অভিনেতারাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy