Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পদচ্যুত দুই নেতা, জল্পনা বিজেপিতে

বিজেপি জেলা কমিটিতে রদবদল হল মঙ্গলবার। জেলা কমিটির ২১ জন পদাধিকারীর মধ্যে দু’জনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। ওই দু’জন হলেন জেলার সম্পাদক তথা নলহাটি এলাকার প্রভাবশালী নেতা অনিল সিংহ ও জেলার সহ-সভাপতি নারায়ণ মণ্ডল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৫
Share: Save:

বিজেপি জেলা কমিটিতে রদবদল হল মঙ্গলবার। জেলা কমিটির ২১ জন পদাধিকারীর মধ্যে দু’জনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। ওই দু’জন হলেন জেলার সম্পাদক তথা নলহাটি এলাকার প্রভাবশালী নেতা অনিল সিংহ ও জেলার সহ-সভাপতি নারায়ণ মণ্ডল। একই সঙ্গে জেলার সহ-সভাপতি করা হয়েছে বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরীকে। উঁচু পদ দিয়ে বকলমে শুভাশিসবাবুর ক্ষমতা

কিছুটা খর্ব করা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এ হল জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের বিপক্ষে মাথা তোলার পরিণাম।

যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন প্রকাশ্য। দল সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণবাবু ও জেলার সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলের বিরুদ্ধে কখনও দুবরাজপুরে, কখনও গণপুরে, কখনও বা সিউড়িতে রাজ্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বা বীরভূমের পর্যবেক্ষক রাজীব ভৌমিকদের সামনেও ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে।

গত ১০ নভেম্বর বিজয়া সম্মিলনীর সভাকে ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছিল জেলার বিজেপির অন্তর কলহ। ওই দিন সিউড়ির রামকৃষ্ণ সভাগৃহে আয়োজিত ওই সভা থেকেই দলের বর্তমান নেতৃত্ব বিশেষ করে রামকৃষ্ণ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের তিন প্রাক্তন জেলা সভাপতি ও সম্পাদক। সেই তালিকায় দুধকুমার মণ্ডল, অনিল সিংহেরা ছিলেন। সভা সম্মেলনীর আয়োজক ছিলেন শুভাশিসবাবু। কেউ বলেছিলেন, ছোট মন নিয়ে বড় দল করা যায় না। কেউ বলেন, দলের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি কোনও আস্থা নেই, একথা রাজ্যের নেতাদের কাছে স্পষ্ট করে দিতেই এই সভা। এক নেতা স্পষ্ট বলেন, জেলায় এমন এক মুখ প্রয়োজন, যিনি সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন। তার জেরেই কি রদবদল?

জেলা সভাপতির বক্তব্য, ‘‘না, সেটা নয়। তবে দলের ভাল চেয়েই সামান্য কিছু বদল হয়েছে। এবং সেটা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলেই করা হয়েছে। মহম্মদবাজার থেকে পুনম হেমব্রম ও বোলপুরের দিলীপ মুখোপাধ্যায়কে পদ দেওয়া হয়েছে।’’

জেলা সভাপতি যাই দাবি করুন, এই রদবদল ঘিরে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে দলের অন্দরে। যা স্পষ্ট পদচ্যুত অনিল সিংহের কথাতেও। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁর (রামকৃষ্ণ রায়) বেশ কিছু কাজের প্রতিবাদ আমাকে করতে হয়েছে। অপ্রিয় সত্যি কথার জন্যই উনি এই পদক্ষেপ করলেন। কিন্তু এলাকায় আমার জনসমর্থন রয়েছে। পদে না থাকলেও দলের কাজ করা থেকে আমাকে উনি সরাতে পারবেন না।’’ যে রেজলিউশন বা প্রস্তাবনার ভিত্তিতে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা তিনি দলের কাছে চেয়েছেন বলেও অনিলবাবু জানান। অন্যদিকে শুভাশিসবাবুর মন্তব্য, ‘‘বদলের সিদ্ধান্ত তো মিটিং ডেকে নেওয়ার কথা! কী ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, জানা নেই।’’

জেলা বিজেপি কর্মীদের কয়েক জন নেতা বলছেন, সম্প্রতি দলের এক রাজ্য নেতার সভায় ভিড়ের বহর দেখে ক্ষোভ আরও বাড়ে জেলা সভাপতির। কারণ, এই ভিড় টানার কাজটা করেছিল বিপক্ষ শিবিরই। কিন্তু, ক’দিন আগে দলের রাজ্য সভাপতির বোলপুরের সভায় ভিড় টানতে ব্যর্থ হন জেলা সভাপতি। যা শুনে রামকৃষ্ণবাবু বলে দিচ্ছেন, ‘‘পদ খুইয়ে কেউ কেউ এমন অবান্তর কথা বলতেই পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP District Committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE