Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
বলরামপুর

বেড়সায় ছাত্রীর জুতো বাঁধলেন সভাধিপতিই

ছোট ছেলেমেয়েদের খালি পায়ে স্কুলে যেতে দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের জুতো পরানোর কথা ভেবেছিলেন। এরপরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় স্কুল পড়ুয়াদের জুতো বিলি। বুধবার তেমনই একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেই হাঁটু মুড়ে বসে পড়ুয়ার পায়ে জুতো বেঁধে দিলেন পুরুলিয়ার জেলা সভাপধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বলরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৬:৪৩
Share: Save:

ছোট ছেলেমেয়েদের খালি পায়ে স্কুলে যেতে দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের জুতো পরানোর কথা ভেবেছিলেন। এরপরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় স্কুল পড়ুয়াদের জুতো বিলি। বুধবার তেমনই একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেই হাঁটু মুড়ে বসে পড়ুয়ার পায়ে জুতো বেঁধে দিলেন পুরুলিয়ার জেলা সভাপধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো।

বুধবার বলরামপুর ব্লকের বেড়সা গ্রামে স্থানীয় কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জুতো বিলি করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১,৯৭,৬৬৭ জোড়া জুতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য এসেছে। তার কিছু আগেই বিলি হয়েছে। এ দিন বলরামপুরের ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জুতো বিতরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় বেড়সা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে।

একদিকে কানহা পাহাড়, অন্যদিকে অযোধ্যাপাহাড়, মাঝখানে বেড়সা গ্রাম। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে পড়ুয়াদের হাতে জুতো তুলে দিতে গিয়ে শেফালি কুমার নামে এক পড়ুয়াকে প্যাকেট থেকে জুতো খুলে নিজের হাতে পরিয়েও দেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। তারপরে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন সকলের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে। আমরা শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। এটাই মুখ্যমন্ত্রী চান। পড়ুয়ারা আমাদের সন্তানের মতো। আমরা তো সন্তানকে জুতো পরিয়ে দিই। এই ছোট ছেলেমেয়েগুলোও তো আমাদের সন্তানের মতোই। তাই ওদের জুতো পরালাম।’’

এই এলাকার স্থান মাহাত্ম্যও আছে। বেড়সা অঞ্চল একসময় মাওবাদীদের কার্যত মুক্তাঞ্চল বলেই পরিচিত ছিল। বাড়ি থেকে তুলে এনে খুন করা তখন হামেশাই হয়েছে। পুলিশে-মাওবাদীতে গুলিযুদ্ধও কম দেখেনি এই এলাকা। এ দিন জুতো বিতরণ করতে এসে সেই কথা উঠেও এসেছে সভাধিপতির গলায়। তাঁর কথায়, ‘‘একদিন এখানে কী অবস্থা ছিল! মুক্তাঞ্চল ছিল। এখন আমাদের উন্নয়নের পথে এগোতে হবে। কেন না মানুষ তাই চাইছেন।’’

সভাধিপতির হাত থেকে জুতো পেয়ে খুশি উপচে পড়েছে তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া বানেশ্বর গোপ, সান্ত্বনা কুমারদের। তারা এ দিন স্কুলে এসেছিল খালি পায়ে। জুতো পরে ফেরার পথে বলে যায়, ‘‘এ বার থেকে জুতো পরে স্কুলে আসব।’’

উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি হেমন্ত রজক। তিনি জানান, জেলার বহু স্কুলের পড়ুয়াদের এই প্রকল্পে জুতো দেওয়া হয়েছে। বলরামপুর-সহ কিছু স্কুলে বাকি ছিল। সেই স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের জুতো বিতরণের কাজ এ দিন থেকেই শুরু হল। বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি সুদীপ মাহাতোও উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sabhadhipati shoe laces
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE