Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

কলের হাতলের পাশেই রাখা ‘স্যানিটাইজ়ার’

গ্রামের প্রত্যেকটি নলকূপের সামনে রাখা হয়েছে ‘স্যানিটাইজ়ার’।

বন্দোবস্ত। নিজস্ব চিত্র

বন্দোবস্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

ভুল করে হাত না ধুয়েই কলের হাতল ধরতে গিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক গ্রামবাসী বলে উঠলেন, ‘‘আগে হাত ধুয়ে নাও। তার পরে কলে হাত দাও।’’

কলের হাতল ধরতে গেলে আগে ‘স্যানিটাইজ়ার’ দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে হাত।

গ্রামের প্রত্যেকটি নলকূপের সামনে রাখা হয়েছে ‘স্যানিটাইজ়ার’। পাশে একটি পাত্রে রাখা জল। করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে পুরুলিয়ার বোরো থানার জরগড়িয়া গ্রামের যুবকদের উদ্যোগে এই ব্যবস্থা।

বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই যুবকেরা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় একটি স্কুলে ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’-এ রয়েছেন ভিন্-রাজ্য থেকে আসা বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক। এর ফলে, এলাকায় করোনা-সংক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসীর একাংশের। যদিও এই শঙ্কা অমূলক বলে দাবি প্রশাসনের। তবে অহেতুক উদ্বেগ যাতে না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই নলকূপের সামনে ‘স্যানিটাইজ়ার’ আর জলের পাত্র রাখা হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীর একাংশের।

ওই গ্রামের যুবক নরপতি মাহাতো ও তপন মাহাতো বলেন, ‘‘সম্প্রতি বাইরে থেকে ফিরেছেন গ্রামের বেশ কিছু যুবক। তাঁদের থেকে গ্রামে সংক্রমণ হতে পারে। এ রকম আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। তাই সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এই ব্যবস্থা চালু করেছি।’’ গ্রামে ১১টি নলকূপ রয়েছে। প্রতিটির সামনে রাখা হয়েছে ‘স্যানিটাইজ়ার’ আর জল।

বুধবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নলকূপ থেকে জল সংগ্রহে আসা সকলেই ‘স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার করছেন। হাত না ধুয়ে কল ব্যবহার করতে যাওয়া বৃদ্ধা ভুল শুধরে বললেন, ‘‘গ্রামের ছেলেদের এই উদ্যোগে দুশ্চিন্তা কমেছে। সংক্রমণের আশঙ্কাও নেই। আমাদের গ্রামে এই রকম ব্যবস্থা আগে ছিল না।’’

জল নিতে আসা গ্রামবাসীর জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়া, 'কোয়রান্টিন'-এ থাকা এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কর্ণাটক ফেরত ২৬ জন রয়েছেন গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে। তামিলনাডু ফেরত এক জনকে রাখা হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে।

তপনবাবু বলেন, ‘‘সবাই মিলে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেকেই কিছু করে আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন। গ্রামে ফেরা সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে।’’

বিডিও (মানবাজার ২) তারাশঙ্কর প্রামাণিক বলেন, ‘‘বাইরে থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়রান্টিন-এ রাখা হয়েছে। নলকূপের সামনে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে ওই গ্রামের যুবকেরা সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছেন। এই উদ্যোগ অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমারা আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE