Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মারামারির অভিযোগে ধৃত রক্ষীই

বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষার বরাত বেসরকারি ঠিকা সংস্থাও পায়। এই মামলায় অভিযুক্ত শুভদীপ ওই সংস্থার অধীনে কর্তব্যরত ছিলেন। অভিযোগকারী গণেশ মাকুড় সংস্থার সুপারভাইজার।

ধৃত শুভদীপ। নিজস্ব চিত্র

ধৃত শুভদীপ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

মত্ত হয়ে মারামারি ও কর্তব্যরত নার্সদের হেনস্থা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এক বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীকে। শনিবার গভীর রাতের ঘটনা। ধৃতের নাম শুভদীপ চট্টোপাধ্যায় ওরফে রানা। রবিবার বিষ্ণুপুর আদালতে তার ৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে।

বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষার বরাত বেসরকারি ঠিকা সংস্থাও পায়। এই মামলায় অভিযুক্ত শুভদীপ ওই সংস্থার অধীনে কর্তব্যরত ছিলেন। অভিযোগকারী গণেশ মাকুড় সংস্থার সুপারভাইজার। তিনি বলেন, “মত্ত অবস্থায় নিরাপত্তাকর্মী শুভদীপ চট্টোপাধ্যায় ওরফে রানা হাসপাতালে আমাকে আচমকা মারধর করে। আমি তখন ডিউটিতেই ছিলাম। এর পরে কর্তব্যরত নার্সদেরও গালিগালাজ করতে থাকে। নিগ্রহ করে। আমি বাধ্য হয়েই থানায় ফোন করি। পুলিশ আসার আগেই সে পালিয়ে যায়।”

বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, গণেশ মাকুড়ের অভিযোগ পেয়েই হাসপাতাল চত্বর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে ওই নিরাপত্তা কর্মীর নামে নানা অভিযোগ আসছিল থানায়। সরকারী কাজে বাধা, কর্তব্যরত নার্সদের হুমকি ও মত্ত অবস্থায় কাজ করার অভিযোগ আছে পুলিশের কাছে।” পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, সরকারি কর্মীদের হেনস্থা ও ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়ার মামলা রুজু হয়েছে। ঠিকা সংস্থার ওই হাসপাতালের নিরাপত্তা ও সাফাইয়ের দায়িত্বে থাকা বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “ঘটনার সময়ে আমি ছিলাম না। মারধরের ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি কোম্পানির আধিকারিকদের জানিয়েছি।’’

এই ঘটনার পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভিতরে মত্ত কর্মীদের ‘উৎপাত’ নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। এমন নজিরও রয়েছে, জেলাশাসকের সামনে পড়েছেন মত্ত কর্মী। ধরে তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে। তার পরেও মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যজিস্ট্রেটের পরিদর্শন চলাকালীন আরও এক মত্তকে ধরে তুলে দিতে হয়েছিল পুলিশের হাতে। বিষ্ণুপুর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। নিরাপত্তা ও সাফাইকর্মীদের দেখাশোনা করার জন্য ঠিকা সংস্থার কর্মীরা রয়েছেন। এর আগেও কিছু কর্মী তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি।’’

রবিবার আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তের বাবা মাধব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “আমার ছেলে কারও সঙ্গে মারামারি করেনি। ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, “হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে একটি সংস্থা। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও কর্মী নিযুক্ত আছেন। তার পরেও এ সব কেন হবে? আমি সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি। কাজ না হলে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলব। স্থায়ী বা অস্থায়ী— কোনও কর্মীই মত্ত হয়ে হাসপাতালের ধারে-কাছে থাকলে রেহাই পাবেন না।’’

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE