Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বান্দোয়ানের রুক্ষ মাটিতে ফলছে স্ট্রবেরি

উদ্যানপালন দফতর এবং একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বান্দোয়ানের গুরুড় পঞ্চায়েতের হেতাকোল গ্রামে স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। মাটি তৈরি করা থেকে গাছ লাগানো, নিয়মিত জল দেওয়া থেকে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন হেতাকোল মা সারদাময়ী স্বনির্ভর মহিলা দলের ১১ জন সদস্যা। কিছু দিন আগে কয়েকটি গাছে লাল স্ট্রবেরি ফলতে দেখে তাঁরা উচ্ছ্বসিত।

 বান্দোয়ানের গুরুড় পঞ্চায়েতের হেতাকোল গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

বান্দোয়ানের গুরুড় পঞ্চায়েতের হেতাকোল গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সমীর দত্ত
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

বান্দোয়ানের মাটিতে বেড়ে উঠছে স্ট্রবেরি গাছ। ঠান্ডার শুরুতে সেই গাছে ধরতে শুরু করেছে লাল টুকটুকে ফল। তা দেখে উচ্ছ্বসিত গাছের পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর দলের মহিলারা।

উদ্যানপালন দফতর এবং একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বান্দোয়ানের গুরুড় পঞ্চায়েতের হেতাকোল গ্রামে স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। মাটি তৈরি করা থেকে গাছ লাগানো, নিয়মিত জল দেওয়া থেকে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন হেতাকোল মা সারদাময়ী স্বনির্ভর মহিলা দলের ১১ জন সদস্যা। কিছু দিন আগে কয়েকটি গাছে লাল স্ট্রবেরি ফলতে দেখে তাঁরা উচ্ছ্বসিত।

দলনেত্রী বেলা মাহাতো বলেন, ‘‘স্ট্রবেরি নামের যে একটা ফল রয়েছে, কিছু দিন আগেও আমরা অনেকে জানতাম না। তাই উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকারিকেরা যখন স্ট্রবেরি চাষ করতে বলেন, তখন কিছুটা দোলাচলে ছিলাম। তাঁরা পরীক্ষামূলক বাবে চাষ করতে সব রকম সাহায্যের ব্যাপারে আশ্বস্ত করায়, আমরা ভরসা পাই।’’

উদ্যানপালন দফতরের বান্দোয়ান ব্লক আধিকারিক আশিস মোহন্ত জানান, স্ট্রবেরি মূলত শীত প্রধান এলাকায় চাষ করা হয়। তবে, এ রাজ্যের নদিয়া ও উত্তর চব্বিশ পরগনায় এখন বাণিজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে মহারাষ্ট্র থেকে মাস খানেক আগে ছশো স্ট্রবেরি চারা এনেছিলাম। এখানকার মাটিতে চাষ হবে কি না, তা নিয়ে আমাদের আশঙ্কা ছিল। সে কারণে কিছুটা বড় চারা আনা হয়। তাই দ্রুত ফল আসতে শুরু করেছে।’’

তাঁর আশা, ভালই ফলন পাবেন। আশিসবাবু জানান, বান্দোয়ানে স্ট্রবেরি চাষের খবর জেনে ইতিমধ্যে কয়েকটি সংস্থা এবং ফল ব্যবসায়ী তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।

বিডিও (বান্দোয়ান) শুভঙ্কর দাস বলেন, ‘‘উদ্যানপালন দফতরের পক্ষ থেকে স্ট্রবেরি চাষের প্রস্তাব পেয়ে তাঁদের উৎসাহ দিই। একশো দিনের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করে চা, হচ্ছে। জমিটি জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। আমি নিজেও দেখে এসেছি। প্রায় সব গাছে স্ট্রবেরি আসতে শুরু করেছে। স্বনির্ভর দলের মহিলারা খুব ভাল কাজ করছেন।’’

গাছ পরিচর্যার খুঁটিনাটি শিখে নিয়েছেন স্বনির্ভর দলের মহিলারা। বেলা মাহাতো, প্রতিমা মাহাতো, বীনারানি মাহাতো বলেন, ‘‘স্ট্রবেরি মাটির সংস্পর্শে এলেই পচন ধরে। তাই প্রতিটি গাছের চার দিকে মাটির উপরে খড় বিছিয়ে দিয়েছি। এতে মাটির ছোঁয়া এড়ানো যাবে।’’

তাঁরা জানান, চ্যালেঞ্জ নিয়েই চাষ শুরু করেছিলেন। পরিচর্যায় তাঁরা ফাঁকি দেননি। মাটি তৈরি, সার মেশানো থেকে নিয়ম করে জল দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করে যাচ্ছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে দেখলাম গাছের ফুল ঝরে গিয়ে লালচে রঙের ফল আসতে শুরু করেছে। তখন বুঝলাম আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Starwberry Cultivation Self Help Group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE