Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তাহাদের কথা

টুপিতে লেখা ‘আমার ভোট আমার ভবিষ্যৎ’। গেঞ্জির পিছনে লেখা ‘মিউনিসিপ্যাল জেনারেল ইলেকশন’। এমনই সাদা গেঞ্জি ও সাদা টুপি পরে শুক্রবার রঘুনাথপুর মহকুমা প্রশাসনের কর্মীরা ভোটকর্মীদের ইভিএম-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিলি করলেন। নিজেও ওই টুপি ও টিশার্ট পরে পুরো প্রক্রিয়া দেখভাল করলেন মহকুমাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনাও।

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৮
Share: Save:

ভোটের টুপি

টুপিতে লেখা ‘আমার ভোট আমার ভবিষ্যৎ’। গেঞ্জির পিছনে লেখা ‘মিউনিসিপ্যাল জেনারেল ইলেকশন’। এমনই সাদা গেঞ্জি ও সাদা টুপি পরে শুক্রবার রঘুনাথপুর মহকুমা প্রশাসনের কর্মীরা ভোটকর্মীদের ইভিএম-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিলি করলেন। নিজেও ওই টুপি ও টিশার্ট পরে পুরো প্রক্রিয়া দেখভাল করলেন মহকুমাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনাও। তিনি বলেন, ‘‘ভোট সম্পর্কে ভোটারদের আরও আগ্রহী করে তুলতে প্রচারমূলক ব্যবস্থা হিসাবে কর্মীদের এই টুপি, টিশার্ট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আমরা ভোটের দিনে বুথের প্রথম পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের শংসাপত্র দেব।” তহবিলে ঘাটতি থাকায় ৫০ জনের বেশি এই টুপি ও টিশার্ট দেওয়া যায়নি। মহকুমাশাসকের কথায়, একই ধরনের পোশাক পরলে একটা ইউনিট হিসেবে সবাই কাজ করবে। এক রসিক কর্মী বলেন, ‘‘সবার গায়েই একই পোশাক। কে কর্তা, কে কর্মী পিছন থেকে চেনাই মুশকিল!’’

মাথা ঠান্ডার দাওয়াই

বাঁকুড়া জেলা স্কুল চত্বরে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোটের সামগ্রী নেওয়ার জন্য মাইকে ডাক পড়ছে ঘন ঘন। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসারেরা ক্যাম্পে আসছেন না। হঠাৎই ক্যাম্পে এসে হাজির জেলাশাসক বিজয় ভারতী। সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা শাসক (সাধারণ) এন টি লেপচা। জেলাশাসককে পেয়েই এক ভোট কর্মী এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘স্যার, ডেকে ডেকে গলায় ব্যাথা ধরে যাচ্ছে। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসাররা ভোটের জিনিসপত্র নিতে আসছেন না। মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে স্যার। শেষে ঝামেলা না হয়ে যায়।” ঝামেলা শুনেই অতিরিক্ত জেলা শাসকের ওই কর্মীকে পরামর্শ, “ঝামেলা একদম করবেন না।” তাঁর মুখের কথা কেড়ে নিয়েই জেলাশাসক বলেন, “ঝামেলা না করে আপনি বরং পাখার তলায় একটু বসুন। আস্তে আস্তে কাজ করুন। আর যখনই মাথা গরম হবে পাখার তলায় গিয়ে বসে পড়বেন।”

তার দেখা নাইরে

সাত সকালে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাসস্ট্যান্ডে হাজির দুই সরকারি কর্মী— অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও বীরেন মুর্মু । মানবাজারের পোস্ট অফিস মোড়ে হাইস্কুলের গায়ে লাগানো সনাতনের চায়ের দোকানে পর পর দু’রাউন্ড চা খেলেন তাঁরা। তবু তার দেখা আর মেলে না। তাঁরা পুরসভার নাগরিক নন। কিন্তু নির্বাচনী কর্মী। মানবাজার ব্লক থেকে নির্বাচনী কর্মীদের নিয়ে দু’টি বাস পুরুলিয়ায় যাওয়ার কথা। একটি গোপালনগর, কেন্দা হয়ে অন্যটি পুঞ্চা, লালপুর হয়ে পুরুলিয়া যাবে। ওঁরা সেই বাসের প্রতীক্ষায় বসে আছেন। হঠাৎ ঝড়ঝড় শব্দে সারা শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে হাজির হল সেই বাস। ততক্ষণে সূর্য আরও তেজি হয়ে উঠেছে। এক জন বলেন, ‘‘বাসের চেহারা দেখে ওঠার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু উপায় নেই ভোট কর্মী বলে কথা। তাই ‘জয় তারা’ বলে উঠে পড়লাম।’’

ওষুধ নিয়ে গোল

ইভিএম, সিল করার গালা, পেন, কালির সঙ্গেই একটা প্যাকেটে ঠাসা ওআরএস এবং কিছু ওষুধপত্র। ভোটকর্মীদের বুথের পাঠানোর আগে তাঁদের ঝোলায় এ সব ভরে দেওয়া হয়েছিল। ঝালদায় বুথে ঢুকে ব্যাগ খুলে জ্বর, পেটখারাপ, অম্বলের ওষুধপত্র দেখে কর্মীরা অবাক। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শুধু ওষুধগুলো নিয়ে করব কী? সব ওষুধ খাবার নিয়ম তো সবাই জানেন না। সে সব তো লেখা নেই। তা ছাড়া, নাম দেখেও তো অনেক ওষুধ কী রোগের জন্য খেতে হবে তাও বোঝা যাচ্ছে না। ভুল ওষুধ খেলে উল্টে গণ্ডগোল হয়ে যাবে যে!’’

ভোটকর্মীর ইচ্ছে

আকাশে জমে রয়েছে মেঘ। বইছে ঝিরঝিরে বাতাস। পুরুলিয়া শহরের ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন থেকে ইভিএম এবং ভোটের জিনিসপত্র নিয়ে গাড়িতে ওঠার আগে আকাশের দিকে তাকিয়ে এক ভোটকর্মী বলেন, ‘‘আহা কি মনোরম প্রকৃতি। কাল এমনটা থাকলেই শান্তি।’’ তাঁর এক সহযাত্রী বলেই ফেললেন, ‘‘এত জোরে বলবেন না। চক্রান্ত করে কেউ মেঘ হটিয়ে দিতে পারে। দেখছেন না মন্ত্রীরা মাঝে মধ্যেই কিছু গোলমাল হলেই ‘বিরোধীদের চক্রান্ত’ দেখতে পান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE