Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সন্ধ্যাতেই ফাটল চকোলেট

কান ঝালাপালা করা মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজোয় সদর্থক ভূমি়কা ছিল পুরুলিয়া পুলিশের। কালীপুজোয় সেই শব্দদূষণ কতটা রোধ করতে সমর্থ হবে পুলিশ? — দেখতে চাইছে জেলাবাসী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যা ছ’টা থেকেই পুড়ল আতসবাজি, কালীপটকা ইত্যাদি। বিক্ষিপ্ত হলেও শোনা গিয়েছে চকোলেট বোমার শব্দও। তবে তাতে ছোট অংশগ্রহণই বেশি দেখা গিয়েছে। কিন্তু, রাত বাড়লে পরিস্থিতি কী হবে, তা গলার কাঁটার মধ্যে বিঁধে রইল পুরুলিয়ার আমনজতার মধ্যে।

কান ঝালাপালা করা মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজোয় সদর্থক ভূমি়কা ছিল পুরুলিয়া পুলিশের। কালীপুজোয় সেই শব্দদূষণ কতটা রোধ করতে সমর্থ হবে পুলিশ? — দেখতে চাইছে জেলাবাসী।

জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘কালীপুজোয় শব্দবাজি ও মাইকের শব্দদূষণ এক সঙ্গে রোধ করাটা যথেষ্ট কঠিন কাজ। এমনিতেই থানাগুলির লোকবল অনেকটাই কম। তার উপরে কে কোথায় শব্দবাজি ফাটাচ্ছে, আবার কোথায় জোরে মাইক বাজছে, সব কিছু নজরে রাখা সমস্যার। পথে বার হওয়া মানুষের নিরাপত্তার দিকটাও তো পুলিশকে দেখতে হবে।’’

তবে শব্দবাজি বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিটি থানা গত চার-পাঁচ দিন ধরে নজরদারি বাড়িয়েছে বলে দাবি পুলিশ প্রশাসনের। শব্দবাজিও আটক করা হয়েছে পুরুলিয়া শহর, আদ্রা, নিতুড়িয়ার মতো কয়েকটি থানায়। পুলিশের দাবি, মূলত আলোর বাজিই বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বাস্তবে কিন্তু আদ্রা, রঘুনাথপুর, নিতুড়িয়া, পুরুলিয়া শহরের কয়েকটি দোকানে গিয়ে চুপিসাড়ে চকোলেট বোমার কথা বললেই ইতিউতি চেয়ে সাবধানে এক বাক্স বোম ধরিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। দাম অবশ্য একটু চড়াই পড়ছে।

বাজি পোড়ানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সময় বেঁধে দেওয়ার পরে তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছিল পুরুলিয়ায়। অনেকেই রায়কে স্বাগত জানালেও রাত আটটা থেকে দশটা এই সময় বেঁধে দেওয়ার ঘটনা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। বেশি রাতের দিকে কালীপুজো শেষ করে অনেকেই বাজি পোড়ান— এই প্রসঙ্গ তুলে রায়ের সমালোচনাও শোনা গিয়েছিল রাজনৈতিক দলের নেতার গলায়। সেই প্রেক্ষিতেই আদ্রা, রঘুনাথপুর, নিতুড়িয়া এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা জানাচ্ছেন, কালীপুজো শেষে বাজি পোড়ানোর রেওয়াজ এক দিনেই বন্ধ হয়ে যাবে, সেটা ভাবা বাস্তবসম্মত নয়। আর এটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। জেলার কয়েকটি বড় থানার ওসিরা জানাচ্ছেন, রাত দশটার পরে কে কোথায় বাজি পোড়াচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে সেই দিকে নজরদারি করা যথেষ্ঠ কঠিন কাজ।

বস্তুত, পুজোর চার-পাঁচ দিন আগে থেকে বাজির দোকানে অভিযান চালিয়ে বাজি আটক করে শব্দবাজি বিক্রিতে রাশ টানার চেষ্টা করতে দেখা গেছে পুলিশকে। বাসস্ট্যান্ড-সহ ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া এলাকায় রীতিমতো নজরদারি চালিয়েছে পুলিশ। সেই প্রেক্ষিতেই এ বার শব্দবাজি বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই কম।

পুরুলিয়া শহরের বাজি ব্যবসায়ী গৌতম চেল, মানবাজারে উত্তম দত্ত দাবি করেন, ‘‘শব্দবাজি বিক্রি করলে পুলিশ খুবই ঝামেলা করছে দেখে আমরা সেই বাজি আনাই বন্ধ করে দিয়েছি। মূলত কালী পটকার মত কম আওয়াজের বাজির সঙ্গে আলোর বাজি বিক্রি করছি।” ঝালদার বাসিন্দা রাহুল অগ্রবাল বলেন, ‘‘আগে আমরা শব্দবাজি ফাটাতাম ঠিকই। কিন্তু, এখন আতসবাজিতেও মজা পাচ্ছি।’’

তাঁদের মতোই সচেতন মানুষই এখন পুলিশের আশার সলতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE