Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Strike

ধর্মঘটে টিফিন হাতে পড়ুয়ারা

ওই পড়ুয়াদের বাড়ি কীর্ণাহার এলাকায়। বুধবার তারা স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তার মোড়, স্টেশন রোড প্রভৃতি এলাকায় প্রায় ১০০ জন ভিক্ষাজীবী এবং প্রতিবন্ধীদের হাতে টিফিনের প্যাকেট তুলে দেয়।

খরচ বাঁচিয়ে টিফিন। নিজস্ব চিত্র

খরচ বাঁচিয়ে টিফিন। নিজস্ব চিত্র

অর্ঘ্য ঘোষ 
কীর্ণাহার শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৫
Share: Save:

ধর্মঘটে আটকে পড়া বাস-ট্রেনের যাত্রীদের রান্না করে খাওয়ানোর নজির আছে। এ বার ধর্মঘটের জেরে বিপাকে পড়া ভিক্ষাজীবী এবং দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের পাশে টিফিন হাতে দাঁড়ানোর নজিরও তৈরি হল। এ কাজ যারা করল, তাদের কেউ স্কুল, কেউবা কলেজে পড়ে। নিজেদের টিফিন খরচের টাকা বাঁচিয়ে ভিক্ষাজীবী, দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের টিফিনে আপ্যায়িত করে ওরা। তার জন্য দোকানে দোকানে ভিক্ষাও করেছে পড়ুয়ারা।

ওই পড়ুয়াদের বাড়ি কীর্ণাহার এলাকায়। বুধবার তারা স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তার মোড়, স্টেশন রোড প্রভৃতি এলাকায় প্রায় ১০০ জন ভিক্ষাজীবী এবং প্রতিবন্ধীদের হাতে টিফিনের প্যাকেট তুলে দেয়। এ জন্য বেশ কিছু দিন ধরে নিজেদের হাতখরচের টাকা বাঁচানোর পাশাপাশি মঙ্গলবার স্থানীয় বাজারে দোকানে দোকানে কার্যত ভিক্ষা করে তারা। সেই টাকায় এ দিন ভিক্ষাজীবী এবং প্রতিবন্ধীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পাঁউরুটি, লাড্ডু, মণ্ডা , কলাভর্তি টিফিন প্যাকেট এবং জলের বোতল।

কীর্ণাহার তারাপদ স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্রেয়া মুখোপাধ্যায়, কীর্ণাহার শিবচন্দ্র হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র হিমাদ্রি দাসেরা বলে, ‘‘রাস্তাঘাটে ভিক্ষাজীবী এবং দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের দেখে খুব কষ্ট হত। ওঁদের জন্য কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করতাম।’’ লাভপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অরিত্র দে, রৌমিতা দত্তরা বলে, ‘‘আমাদের সামর্থ্য কম। ওদের জন্য কিছু করার তাগিদে নিজেদের হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে রাখি। দোকানে দোকানে ভিক্ষাও করি। যেহেতু ধর্মঘট, দোকানপাট সব বন্ধ। ভিক্ষা করতে এসে ভিক্ষাজীবীরা বিপদে পড়বেন। সেই জন্যই আমরা ওঁদের টিফিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সেটা করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’

ব্যবসায়ী সুবীর মণ্ডল, রাজা সাহা, পিন্টু মণ্ডলেরা জানান, ওদের উদ্দেশের কথা শুনে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেননি। সাহায্য করতে পেরে খুশি তাঁরাও। ভিক্ষাজীবী সামু দাস, দেবী বাগদিরা বলছেন, ‘‘ভিক্ষা কর‍তে এসে দোকানপাট সব বন্ধ থাকায় খিদে, তেষ্টায় খুব কাহিল হয়ে পড়ছিলাম। ওদের টিফিনের প্যাকেটে খিদে-তেষ্টা দূর হয়েছে। ভগবান ওদের মঙ্গল করুক।’’ বিডিও (নানুর) অরূপকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ওদের সহমর্মিতা বোধ সুন্দর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Food Packet Bandh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE