—ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সুনীল সরেন। বিজেপি-র যুব মোর্চার রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক পদে সুনীল বসতেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে তৎপর হয়েছে অরাজনৈতিক আদিবাসী সংগঠন ‘আদিবাসী গাঁওতা’। সংগঠন সূত্রে খবর, বুধবার সিউড়ির তিলপাড়ায় গাঁওতার অফিস থেকে সুনীলের সমস্ত জিনিসপত্র বের করে দেওয়া হয়েছে। অফিসে জমায়েত হয়েছিলেন সংগঠনের বহু সদস্য। তাঁদের দাবি, সুনীলের নতুন রাজনৈতিক জীবন সুখের হোক। কিন্তু গাঁওতা অফিসকে কোনও রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
তবে, এতদিন যুক্ত থাকার পরে, সংগঠনের এমন আচরণের পিছনে একদা ‘বন্ধু’ রবীন সরেনের ‘ইন্ধন’ দেখছেন সুনীল। সরাসরি রবীনের নাম না-নিলেও সুনীলের দাবি, ‘‘আমি রাজনৈতিক দলে যোগ দিতেই পারি। কিন্তু, গাঁওতাকে তার জন্য ব্যবহার করিনি। আসলে গাঁওতার অফিস দখলই মূল উদ্দেশ্য। তাই পিছন থেকে ইন্ধন দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, আদিবাসী সমাজ কোনও সিদ্ধান্তের আগে অলোচনায় বসে। এ ক্ষেত্রে সেটা হয়নি।
অন্য দিকে রবীনের অভিযোগ, ‘‘যতদিন তিনি (সুনীল) গাঁওতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঠিক ছিল। কিন্তু বর্তমানে তিনি ও তাঁর এক সঙ্গী অফিসটিকে বিজেপি কর্যালয় হিসাবেই ব্যবহার করছিলেন। গাঁওতা অফিসকে এ ভাবে কাজে লাগানোকে ঘিরেই আপত্তি তুলেছিলেন সংগঠনের সদস্যরা। বহুবার অফিস থেকে সরে যাওয়ার কথা বললেও সুনীল সরেননি।’’ রবীনের দাবি, এ বার সুনীল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সদস্যেরাই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়েছেন। এ দিন জমায়েত হওয়া সংগঠনের সদস্য রামেশ্বর বাস্কে, শ্যামল মুর্মু, ইসাক মুর্মু, শিবদাস হেমব্রমেরা রবীনের সুরেই সুর মিলিয়েছেন।
‘আদিবাসী গাঁওতার’ দুই নেতা তথা রবীন ও সুনীল সরেনের পারস্পরিক সম্পর্ক অনেক দিনই হল ‘তলানি’তে ঠেকেছে। মাস দুই আগে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ফুটেজে সুনীলকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমি বিজেপির দিকে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। আগামী দিনে আমাকে বিজেপিতে দেখলে যাতে ভুল বোঝাবুঝি না-থাকে, তাই সকলের সামনে কথাটা বললাম।’ তার পরেই ‘বন্ধু’ সম্পর্কে রবীনের মন্তব্য ছিল, ‘‘সুনীল বিজেপি করতে হলে করুন। কিন্তু, গাঁওতাকে ব্যবহার করা বন্ধ করুন।’’
এর পরে মহম্মদবাজারে ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লাখনি নিয়ে নড়াচড়া শুরু হওয়ার পরে দুই নেতাই নিজেদের মতো করে নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করতে উদ্যোগী হন। তবে সুনীল বিজেপির দিকে ঝুঁকে ছিলেন। এ বার তিনি বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় দূরত্ব আরও বাড়ল। এ দিন তিলপাড়ার গাঁওতা অফিস থেকে সুনীলকে কার্যত ‘ছেঁটে’ ফেলার মধ্যেও সেই দ্বন্দ্বেরই ছায়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy