Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
এক মাসের মধ্যে পুরসভাকে জলাশয় কাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ প্রশাসনের

জেলা সদরে পুকুর বোজানোর অভিযোগ

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি পুরসভা এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভট্টাচার্য পাড়ায় ‘চৌমর’ নামে একটি পুকুর রয়েছে। ওই পাড়ায় একটি ক্লাবের উল্টো দিকে সেটি অবস্থিত।

বোঝাই: এ ভাবেই ‘ভরাট’ হচ্ছে পুকুর। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

বোঝাই: এ ভাবেই ‘ভরাট’ হচ্ছে পুকুর। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০০:০৫
Share: Save:

জলসঙ্কট নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই সিউড়ি পুরসভা এলাকায় পুকুর ভরাটের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল। তড়িঘড়ি পদক্ষেপও করেছে জেলা প্রশাসন। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিত নির্দেশের পাশাপাশি পুরসভাকেও এক মাসের মধ্যে পুকুর কাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর মহকুমা) রাজীব মণ্ডল। সিউড়ি পুরসভা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের থেকে এই মর্মে চিঠি এসেছে।

এ দিকে, পুকুরের মালিকানার সঙ্গে শহরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি পুরসভা এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভট্টাচার্য পাড়ায় ‘চৌমর’ নামে একটি পুকুর রয়েছে। ওই পাড়ায় একটি ক্লাবের উল্টো দিকে সেটি অবস্থিত। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের নথি অনুয়ায়ী, সিউড়ি শহরের রমারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও দেবরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের নামে রেকর্ড রয়েছে। মাসখানেক আগে সেই পুকুর অবৈধ ভাবে ভরাট করার অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ‘‘ওই পুকুরটি এলাকার একমাত্র ব্যবহারযোগ্য পুকুর। কিছু সমাজবিরোধী স্বার্থসিদ্ধির জন্য পুকুর বোজানোর চেষ্টা করছে। বাধা দিতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ সে সব জানিয়ে পুলিশে অভিযোগও করেন তাঁরা। পুরসভা সেই সময় দাবি করেছিল, ওই পুকুর নিয়ে আগেই অভিযোগ জমা পড়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে পুকুর ভরাটের কাজও তখন বন্ধ করা হয়েছিল। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মণিদীপা মুখোপাধ্যায়ের জবাব ছিল, ‘‘পুকুর ভরাট করা নিয়ে অভিযোগ হয়েছে শুনেছি। তবে কে বা কারা কী করছে তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই।’’ এর পরে বিষয়টিতে সাময়িক ধামাচাপা পড়ে। কিন্তু, পুকুর রাতারাতি ভরাট করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে অভিযোগ আসতেই নড়চড়ে বসে প্রশাসন। সিউড়ির মহকুমাশাসক বলছেন, ‘‘পুকুরটি জমি মাফিয়ারা রাতারাতি ভরাট করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছিল। খতিয়ে দেখে ঘটনার সত্যতা মেলে। তার পরে জেলাশাসকের নির্দেশে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পুরসভাকেও চিঠি করা হয়েছে পুকুরটি ফের কাটিয়ে দেওয়ার জন্য।’’

পুকুর ভরাটের মতো অভিযোগে প্রয়াত বাবা ও কাকুর নাম চলে আসায় ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত সিউড়ি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘পুকুর পরিবারের নামে হলেও বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। এক জন ক্রেতা আগাম ২ লক্ষ টাকা আমাকে দেন। তার নথি আমার কাছে রয়েছে। যেহেতু পুরো টাকা দেননি, তাই দলিল ওঁর নামে হয়নি। এখন তিনি কখন, কী ভাবে পুকুর ভরাট করছিলেন জানা নেই। আমি ও আমার পরিবার পড়াশোনা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ, সমাজসেবা, দেবসেবা নিয়ে ব্যস্ত। তাই পুকুর পাহারা দিয়ে বসে নেই। যে বা যাঁরা এ কাজ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।’’

পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ মেনে পুকুর কাটিয়ে দেব। কিন্তু, খরচের টাকা দেওয়ার জন্য মালিকানা যাঁদের রয়েছে, তাঁদের নোটিস করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE