Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ধুঁকছে পাখা, গরমে বিপত্তি

গত কয়েক দিন ধরেই বাঁকুড়ায় তাপমাত্রার পারদ ধাপে ধাপে ঊর্ধ্বমুখী।

 বিশ্রাম: রোদের দাপটে রাস্তা সুনসান। ফাঁকা বাজারে তরমুজ বিক্রেতা। রবিবার বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

বিশ্রাম: রোদের দাপটে রাস্তা সুনসান। ফাঁকা বাজারে তরমুজ বিক্রেতা। রবিবার বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

সকাল থেকেই ঘাম ঝরছে। বেলা একটু গড়াতেই বাতাস আগুনের হলকার মতো গরম হয়ে উঠছে। সন্ধ্যার পরেও একই রকমের ঘাম আর অস্বস্তি। গত কয়েক দিনের লাগাতার গরমে নাভিশ্বাস উঠছে বাঁকুড়ার মানুষের। তীব্র দাবদাহের সঙ্গে কিছু জায়গায় দোসর হয়েছে লোডশেডিং আর লো-ভোল্টেজ।

গত কয়েক দিন ধরেই বাঁকুড়ায় তাপমাত্রার পারদ ধাপে ধাপে ঊর্ধ্বমুখী। জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৬ ডিগ্রি। শনিবার কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০.৮ ডিগ্রিতে। রবিবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি। ঝাঁঝাঁ রোদে এ দিন বাইরে চোখ মেলাই ছিল দায়। রাস্তাঘাট ফাঁকা। বিশেষ কাজ ছাড়া মানুষজন ঘরের বাইরে বেরোননি। বাঁকুড়ার শিখরিয়াপাড়ার বাসিন্দা নিতাই দত্ত বলেন, “একে তীব্র গরম, তার উপর গত কয়েক দিন ধরেই রোজ রাতে লোডশেডিং হচ্ছে। ঘণ্টা খানেক টানা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ুয়ার মত অবস্থা হচ্ছে আমাদের।” শিখরিয়াপাড়ার বাসিন্দা সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “লোডশেডিং যেমন আছে তার সঙ্গে আবার লো-ভোল্টেজও। ভোল্টেজ এতটাই কম থাকছে যে এয়ার কন্ডিশন চালানো যাচ্ছে না।’’ ভোল্টেজ কম হওয়ায় পাখাও স্বাভাবিক গতিতে ঘুরছে না বলে অভিযোগ তুলছেন জুনবেদিয়ার বাসিন্দা রণজিৎ হাজরা।

সমস্যার কথা মেনেও নিচ্ছে জেলা বিদ্যুৎ দফতর। দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরম একটু বাড়তেই গত কয়েক সপ্তাহে বিদ্যুতের চাহিদা অন্তত পাঁচ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। শহরে বেড়েছে এসির সংখ্যা। এতে বেশ কিছু এলাকায় ভোল্টেজ কমে যাওয়ার সমস্যা হচ্ছে। যদিও শহরে লোডশেডিং-এর সমস্যা হচ্ছে বলে মানতে চায়নি বিদ্যুৎ দফতর। বাঁকুড়ার বিদ্যুৎ বিভাগের রিজিওনাল ম্যানেজার দেবাশিস মণ্ডলের দাবি, “লোডশেডিং-এর সমস্যা নেই। স্থানীয় কিছু সমস্যার জন্য কিছু এলাকায় সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে থাকতে পারে। রুটিন মাফিক এই সমস্যা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাইনি।”

তিনি জানাচ্ছেন, কোথাও চাহিদা বাড়ায় ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে বা কোথাও তার ছিঁড়ে সাময়িক বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে থাকতে পারে। তবে কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে খবর পেলেই দফতরের কর্মীরা গিয়ে দ্রুত সারাই কাজ করছেন বলেই দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “ভোল্টেজের সমস্যা কিছু জায়গায় হচ্ছে বলে আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় নতুন ট্রান্সফর্মার বসিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টাও করছি।”

তিনি জানান, রবিবারই বাঁকুড়া শহরের স্কুলডাঙা এলাকায় একটি নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হয়েছে। এর ফলে ওই এলাকায় ভোল্টেজ কম হওয়ার সমস্যা কিছুটা মিটবে। সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির জেলা সম্পাদক স্বপন নাগ বলেন, “এই গরমে বিদ্যুতের পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িতেও টেকা যায় না। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামেও প্রায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকছে বলে শোনা যায়। আমাদের দাবি, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিষেবার মান বাড়াতে বিশেষ নজর দিক দফতর।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Weather Bankura Summer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE