Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের পরেই আত্মঘাতী বর, শোকের ছায়া ময়ূরেশ্বরের গ্রামে

পুলিশ জানায়, মৃত ধ্রুব্র দলুইয়ের (২৯) বাড়ি ময়ূরেশ্বরের নোওয়াবাদ গ্রামে। পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। শুক্রবার রাতে ময়ূরেশ্বরেরই একটি গ্রামে এক তরুণীর সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয় ধ্রুব্রর। শনিবার সকালে সংলগ্ন মাঠের একটি গাছে গলায় নিজের ধুতির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেহ মেলে তাঁর।

শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ধ্রুবর বোন।

শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ধ্রুবর বোন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৯
Share: Save:

বিয়ের পরেই গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন বর।

পুলিশ জানায়, মৃত ধ্রুব্র দলুইয়ের (২৯) বাড়ি ময়ূরেশ্বরের নোওয়াবাদ গ্রামে। পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। শুক্রবার রাতে ময়ূরেশ্বরেরই একটি গ্রামে এক তরুণীর সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয় ধ্রুব্রর। শনিবার সকালে সংলগ্ন মাঠের একটি গাছে গলায় নিজের ধুতির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেহ মেলে তাঁর। ধ্রুবর জামাইবাবু সুভাষ দলুই বলেন, ‘‘নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিল। কেন যে আত্মহত্যা করতে গেল ধ্রুব, বুঝতে পারছি না!’’ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে বরযাত্রীদের অধিকাংশই বাড়ি ফিরে যান। সকালে ‘প্রাতকৃত্য করতে যাচ্ছি’ বলে নিজের এক ভাগ্নের সঙ্গে মাঠের দিকে বেরিয়ে যান ধ্রুব। তারপরে মাঝপথে ভাগ্নেকে বিয়েবাড়ি ফিরে যেতে বলেন। একাই মাঠের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও তিনি না ফেরায় পাত্রীর বাড়ির লোকেরা মাঠে গিয়ে দেখেন, একটি গাছে গলায় নিজের ধুতির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন ‘জামাই’। সাঁইথিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

ধ্রুব।

ঘটনার পরেই দুই পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না কেউ। মেয়ের এক সম্পর্কিত কাকা বলেন, ‘‘তখন সবে বর-কনেকে আশীর্বাদ করে বিদায় দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু বর ফিরছে না দেখে আমরা মাঠে গিয়ে দেখি ওই দৃশ্য!’’ একই অবস্থা ধ্রুবর বাড়িতেও। এ দিনই ছিল বৌভাতের অনুষ্ঠান। রান্নাবান্না কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু খারাপ খবর পৌঁছোনোর পরেই নেমে আসে শোকের ছায়া। বন্ধ হয়ে যায় শুভকাজের সব তোড়জো়ড়।

কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা দীনবন্ধু এবং মা কামনা দলুই। দম্পতির দুই ছেলে দুই মেয়ে। ধ্রুব সবার ছোট। বাকিদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ধ্রুবর জামাইবাবু সুভাষ দলুই বলেন, ‘‘আমরা রাতেই বিয়ে দিয়ে চলে আসি। সকালে খবরটা পাই। নিজেই পাত্রী পছন্দের পরে বিয়ে করে। কী থেকে এমন সিদ্ধান্ত নিল, বুঝতে পারছি না।’’ প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান নিজের গ্রামে এক তরুণীর সঙ্গে ধ্রুবর ঘনিষ্ঠতা ছিল। সেই তরুণীকে বিয়ে করা সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। সম্ভবত মানসিক টানাপোড়নের শিকার হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

—নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE