Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রক্ষীদের ছুটি নিয়ে কড়াকড়ি

জেলা পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে রক্ষীরা যাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, শুধু তাঁদের সম্মত্তি নিয়েই ছুটিতে যান। সব রক্ষীই যে এমনটা করেন, তা নয়। তবে, যাঁরা এ ভাবে বাড়িতে যান, তাঁদের সংখ্যাও কম নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫১
Share: Save:

থানাকে না জানিয়ে শুধুমাত্র বিধায়কের সম্মতি নিয়ে ‘ছুটি’ নিয়েছিলেন রক্ষী। সেই রাতেই আততায়ীর গুলিতে খুন হয়ে যান নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের ওই বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। ওই ঘটনার সঙ্গে বাঁকুড়ার রাইপুরের ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অনিল মাহাতো খুনের সাদৃশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মারা যান তিনি। সেই সময় তাঁরও রক্ষী ছিল না। শোনা গিয়েছিল, রক্ষী স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য দফতরকে না জানিয়ে অনিলবাবুকে বলে ছুটি নিয়েছিলেন।

জেলা পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে রক্ষীরা যাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, শুধু তাঁদের সম্মত্তি নিয়েই ছুটিতে যান। সব রক্ষীই যে এমনটা করেন, তা নয়। তবে, যাঁরা এ ভাবে বাড়িতে যান, তাঁদের সংখ্যাও কম নয়। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা চলতে চলতে বর্তমানে যেন একটা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে জনপ্রতিনিধিদের কাছে থাকায় সুসম্পর্ক তৈরি হয়। ফলে তাঁরাও মুখের কথায় ছুটি দিয়ে দেন।

অনিলবাবুর স্ত্রী সুলেখা মাহাতো বর্তমানে রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক খুনের সঙ্গে নিজের স্বামী খুনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “নিরাপত্তারক্ষীর উপস্থিতি কতটা জরুরি অনেকেই তা বুঝতে পারেন না। কিছু ঘটে গেলে তখন আক্ষেপ করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। আজও মনে হয়, সঙ্গে রক্ষী সঙ্গে থাকলে হয়ত আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারতেন।” সুলেখাদেবীর বর্তমানে এক জন রক্ষী রয়েছে। তিনি জানান, তাঁর রক্ষী ছুটিতে গেলে বদলি হিসেবে অন্য কাউকে সবসময় তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

প্রশ্ন উঠছে, রক্ষীদের ছুটি দেওয়া নিয়ে আদৌ সতর্ক হয়েছেন? জেলায় শাসকদলের এক বিধায়ক বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে পরিচিত হয়ে যাওয়ার ফলে রক্ষীদের সঙ্গে ঘরের লোকের সম্পর্ক হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে মৌখিক ভাবেই ছুটি দিয়ে থাকি।’’

যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের রক্ষীদের চাইলেই ছুটি দিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে রক্ষীদের পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করতে হয়।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “রুটিন মাফিক নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তখন সকলকেই নির্দেশ দেওয়া হয় ছুটি নিলে নিয়মনীতি মেনে আবেদনের ভিত্তিতে নিতে হবে। নদিয়ার ঘটনার পরে আরও কড়া হয়েছি।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রেরও এক জন রক্ষী রয়েছে। তিনি বলেন, “এক জন বা দু’জন নিরাপত্তা রক্ষী দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না। সারা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যার মেটানো গেলেই দুর্ঘটনা রোখা সম্ভব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

MLA Murder Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE