প্রতীকী চিত্র।
সিদ্ধান্ত হয়েছে পরীক্ষা হবে। কিন্তু, কী ভাবে নেওয়া হবে স্নাতক স্তরের ফাইনাল সিমেস্টারের পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনও নির্দেশিকা এখনও কলেজগুলিতে পৌঁছয়নি।
তবে সেই পরীক্ষা অনলাইন, অফলাইন নাকি ‘ব্লেন্ডেড মোড’, যে ভাবেই হোক না কেন, কোভিড পরিস্থিতি মধ্যে কতটা সফল ভাবে পরীক্ষা নেওয়া যাবে তা নিয়ে বীরভূমের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা ধন্দে রয়েছেন। একই ভাবে তাঁরা চিন্তিত ইন্টারনেট পরিষেবা বা স্মার্টফোন থেকে দূরে থাকা পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ কী ভাবে পরীক্ষা দেবে সেটা নিয়েও।
বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এখনও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নেয়নি কী ভাবে হবে। দিন কয়েকের মধ্যেই সিদ্ধান্তের কথা জানা যাবে। তবে অনলাইনে হলে গরিব পড়ুয়াদের পক্ষে সেটা দেওয়া সহজ হবে না। অন্য দিকে, অফলাইন হলে সংক্রমণের ভয় থাকবে।’’
সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পরিচ্ছা জানান, সিদ্ধান্ত মেনে পরীক্ষা নিতে হবে ঠিকই। কিন্তু, জেলা জুড়ে সংক্রমণের যে গতি তাতে সমস্যা হবে। তা ছাড়া পরীক্ষা আনলাইন না অফলাইন বিস্তৃতি মূলক, এমসিকিউ মোডে সেটাই স্পষ্ট নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কোন পথ বাছবে সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।
পরীক্ষা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ১ থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ফাইনাল সিমেস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে। সঙ্গে এটাও জানানো হয়েছিল, পরীক্ষা অনলাইন নাকি অফলাইন অথবা ‘ব্লেন্ডেড মোড’-এ হবে, তা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করবে।
তার পরও স্নাতক স্তরের ফাইনাল সিমেস্টারের পরীক্ষা নিয়ে অধ্যক্ষদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দু’রকম মনোভাবই সামনে আসছে। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলেও জেলার কলেজগুলির অধ্যক্ষদের একটা অংশ বলছেন, ‘‘এক একটি কলেজের ফাইনাল সিমেস্টারের পড়ুয়ার কোথাও ৩০০ কোথাও ৬০০। পড়ুয়ারা কোনও একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নয়। অনেকে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না। ওই অংশের পরীক্ষার্থীরা কী ভাবে পরীক্ষা দেবে?’’ তা ছাড়া জেলায় সংক্রমণের ছবিটা যে ভাবে বাড়ছে তাতে পরীক্ষা দেওয়া পর্যন্ত পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের (যাঁদের একটা বড় অংশ বয়স্ক এবং কোমর্বিডিটি রয়েছে) সকলেই সুস্থ থাকবেন এটা নিয়েও সংশয় আছে। সমস্যা থাকছে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের পদ্ধতি কী হবে তা নিয়েও।
তবে পরীক্ষা করানো নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখা দিয়েছে কিছু অধ্যক্ষের। তাঁরা বলছেন, ‘‘এখন অনলাইন ক্লাস নতুন বিষয় নয়। হতে পারে অর্থনৈতিক ভাবে পিছনের সারিতে থাকা পড়ুয়াদের অনলাইনে পাঠগ্রহণের রিয়েল টাইম সুযোগ হয়ত হয়নি। কিন্তু, বন্ধুদের থেকে বা আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় ইন্টারনেট ক্যাফেতে গিয়ে পড়াশোনা চালাচ্ছেন। তা হলে কেন অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারবেন না পড়ুয়ারা?’’ হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টপাধ্যায় মনে করেন, ‘‘কোভিড এড়াতে এটাই সেরা রাস্তা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy