Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বাড়িতে একা, তাই কি সহজ নিশানা

সুনসান পাড়া, অন্ধকার রাস্তা এবং একা থাকা— এক কথায় যা কিনা অপরাধের ‘আদর্শ’ পরিবেশ। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এলাকার ছেলে হওয়ায় দিগন্তপল্লির অলিগলি, চৌহদ্দি হাতের তেলোর মতো চেনা ছিল ভুবনডাঙার কর্ণ মণ্ডলের।

 দিনেও সুনসান দিগন্তপল্লির রাস্তা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

দিনেও সুনসান দিগন্তপল্লির রাস্তা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৮
Share: Save:

সুনসান পাড়া, অন্ধকার রাস্তা এবং একা থাকা— এক কথায় যা কিনা অপরাধের ‘আদর্শ’ পরিবেশ। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এলাকার ছেলে হওয়ায় দিগন্তপল্লির অলিগলি, চৌহদ্দি হাতের তেলোর মতো চেনা ছিল ভুবনডাঙার কর্ণ মণ্ডলের। পুলিশের দাবি, পরিকল্পনা মতোই চাঁদা চাওয়ার ছুতোয় শুক্রবার সন্ধ্যায় বৃদ্ধা স্কুল শিক্ষিকা হৈমন্তী দত্তগুপ্তের দিগন্তপল্লির বাড়িতে হানা দেয় কর্ণ। তার পরেই লুটের চেষ্টা করে। অবশ্য রাতেই কর্ণকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এমনিতে শান্তিনিকেতনে যে সব পল্লিগুলি রয়েছে, তার বেশির ভাগ বাড়িতেই স্থায়ী ভাবে কেউ বাস করেন না। অনেকেরই কলকাতা সহ অন্যত্র বাড়ি রয়েছে। কেউ মাসে কয়েক বার, কিংবা পৌষমেলা, বসন্ত উৎসব, দুর্গাপুজোর সময়ে চলে আসেন শান্তিনিকেতনের বাড়িতে। এঁদের অনেকে আবার প্রৌঢ়। এই অবস্থায় শুক্রবারের হামলায় অনেকেই ভয় পেয়ে গিয়েছেন। নাম না প্রকাশের শর্তে এঁদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা যেহেতু সব সময় থাকেন না তাই এলাকাগুলির উপরে তেমন নজর দেয় না পুলিশ কিংবা প্রশাসন। একবার রাস্তার আলো খারাপ হলে তা মেরামত করতে বহু দিন লেগে যায়। অন্ধকার, সুনসান থাকার ফলেই এমন ঘটনা বলে তাঁদের দাবি।

সেই আশঙ্কা যে কেবল কথার কথা নয়, পর পর কিছু ঘটনায় তা প্রমাণও হয়েছে। জুন মাসে শান্তিনিকেতনের রাস্তা থেকে আমোদপুরের এক ব্যবসায়ীর আড়াই লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়। শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটি এলাকা দিয়ে মোটরবাইকে বাড়ি যাওয়ার পথে আমোদপুর মিতদাসপুরের বীজ ব্যবসায়ী উত্তম মণ্ডল ও তাঁর বাবা জহর মণ্ডলের থেকে টাকার ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই মাসেই শান্তিনিকেতনের সেবাপল্লির বাড়ি থেকে ভোররাতে ক্যামেরা, মেমরি কার্ড সহ বেশ কিছু নথি চুরি হয় সত্যশ্রী উকিলের বাড়ি থেকে। অনেকের আর্জি, এ সব দেখে জেলা পুলিশ আরও সতর্ক হোক।

পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল অবশ্য বলেন, ‘‘যে কোনও চুরির ক্ষেত্রেই পুলিশের তৎপরতা থাকে। দিগন্তপল্লির ঘটনাতেও দ্রুত তৎপর হয়েছে পুলিশ। সে জন্যই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। পরেও এ ভাবেই তৎপর থাকবে জেলা পুলিশ।’’ শুক্রবার রাতের ঘটনা অনেককে মনে করিয়ে দিয়েছে রেণু সরকার হত্যার কথা। ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়ায় নিজের বাড়িতে খুন হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেণু সরকার। ওই ঘটনায় নিহতের বাড়ির কেয়ারটেকার এবং দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। তবে পুলিশের অনুমান, শুধুমাত্র চুরির জন্যেই হয়তো হৈমন্তীদেবীর বাড়িতে ঢুকেছিল কর্ণ। ছুরির ব্যবহার করেছিল নিতান্তই ভয় দেখানোর জন্যই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loot Crime Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE