Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Pond

বর্ষার আগেই হাজার পুকুর

বৃষ্টির জল ধরে রাখতে জেলা জুড়ে হাজারের বেশি পুকুর খননের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

সবে শুরু: গ্রীষ্ম শুরুর আগেই শুকিয়েছে পুকুর। রঘুনাথপুরে জয়চণ্ডী পাহাড় সংলগ্ন এলাকায়। ছবি: সঙ্গীত নাগ

সবে শুরু: গ্রীষ্ম শুরুর আগেই শুকিয়েছে পুকুর। রঘুনাথপুরে জয়চণ্ডী পাহাড় সংলগ্ন এলাকায়। ছবি: সঙ্গীত নাগ

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ০১:১৪
Share: Save:

পরিকল্পনামাফিক কাজ চললে বর্ষার আগেই জেলায় চারশো একরের বেশি রুক্ষ জমি জলাশয়ে পরিণত হবে। সে লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই প্রকল্পে জেলা জুড়ে এক হাজারের বেশি পুকুর খোঁড়া হবে আগামী কয়েকমাসে। কাজও শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে। সেই কারণে এই সপ্তাহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পুকুর সপ্তাহ’।

বৃষ্টির জল ধরে রাখতে জেলা জুড়ে হাজারের বেশি পুকুর খননের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। গত সোমবার থেকে সমস্ত ব্লকেই এই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ২০টি ব্লকে মোট ১,০৩৭টি পুকুর খোঁড়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য পূরণ হলে আগামী বর্ষার আগে ৪১৪ হেক্টরেরও বেশি রুক্ষ জমি জলাভূমিতে পরিণত হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ২৭ কোটি ২৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে এই কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

ফি বছর গ্রীষ্মে জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাভাব দেখা যায়। সেই সমস্যার মোকাবিলায় সরকারি খাস জমি চিহ্ণিত করে সেখানে পুকুর খোঁড়ার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানান, আগে সরকারি পতিত জমি চিহ্ণিত করা হয়েছে। কোথায় পুকুর খনন করলে জল ধরা যাবে তা দেখা হয়েছে। বৃষ্টির জল ধরে রেখে পুকুরে মাছ চাষ হবে। তেমনই পুকুরের ঢালু জমিতে আনাজ চাষ এবং পাশের নিচু জমিতে ডালশস্যের চাষ এবং বৃক্ষরোপণ করা যেতে পারে। এই কাজে কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরের সহায়তা নেওয়া হবে।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের নোডাল অফিসার সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, জল ধরে রাখা গেলে মাটির নীচের জলস্তর বাড়বে। বাড়ানো যাবে স্থানীয় এলাকায় জলের জোগান। সেচ নিয়ে সমস্যার সমাধানও খানিকটা করা যাবে। পুকুরগুলিকে ঘিরে বহুমুখী কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

প্রতিটি প্রশাসনিক বৈঠকেই জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় পানীয় এবং সেচের জলের সমস্যার নিয়ে খোঁজ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক বার প্রশাসনকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, তাঁকে যেন এই জেলায় এসে পানীয় জলের অভাবের কথা শুনতে না হয়।

গত ডিসেম্বরে জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে পানীয় জল সরবরাহ নিয়ে খোঁজখবর করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘জাইকা’ (জাপান ইন্টারন্যাশন্যাল কো-অপারেটিভ এজেন্সি) প্রকল্পের কাজের গতি দেখে বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অর্থে জল সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে নবান্নের নির্দেশে জেলার ১৬টি জলাধারকে ঘিরে নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্প গড়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। সে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২০০টি গ্রামে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ

করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pond Monsoon Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE