সিউড়ির স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্কুলেই তৈরি হবে বিদ্যুৎ। উৎপাদিত বিদ্যুৎ শুধু স্কুলের বিদ্যুতের বিল সাশ্রয় করবে তাই নয়। অন্য কাজেও লাগাবে বিদ্যুৎ দফতর।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতে চলেছে সিউড়ি ১ ও ২ ব্লকের মোট তিনটি স্কুলে। প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। কাজ করছে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল রিনিউএবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট এজেন্সি’।
গত ২৮ মার্চ রামপুরহাট কলেজে এমনই এক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বেধন করেছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এ বার কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে সেই বিদ্যুৎ এ বার স্কুলেও। যে যে স্কুলে এমন ব্যবস্থা গড়ে উঠছে সেগুলি হল সিউড়ি ২ ব্লকের হাটজনবাজারের রামপ্রসাদ রায় স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়, সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা যদু রায় মেমোরিয়াল এবং নগরী শুধাংশু বদনী শিক্ষা নিকেতন। প্রথম দুটি স্কুলের ছাদে সোলার মডিউল বসানোর কাজ শেষ। ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট মিটার বসানোর অপেক্ষা। শেষ স্কুলটিতে সবে কাজে হাত পড়েছে।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, প্রচলিত শক্তির ব্যবহারের বাইরে অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সরকার। সৌর বিদ্যুৎ সেই অচিরাচরিত শক্তিগুলির অন্যতম। রিনিউএবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট এজেন্সি-র পক্ষে চিফ ইঞ্জিনিয়ার সমীরকুমার দাস বলছেন, ‘‘সারা রাজ্যে ২০০টির মতো স্কুল এবং কলেজের ছাদে কমপক্ষে ১০ কিলোওয়াট পিক এবং যেখানে সুযোগ রয়েছে সেখানে ২০ কিলোওয়াট পিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার মডিউল লাগানো হচ্ছে। সূর্যের আলো ঠিকমতো থাকলে ১০ কিলোওয়াট পিক থেকে ৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’’
বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, স্কুলে পুজো বা গরমে টানা বড় ছুটি থাকে। এ ছাড়াও রয়েছে অন্য ছুটি। তখন উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি চলে যাবে বিদ্যুৎ দফতরের পাওয়ার গ্রিডে। কতটা বিদ্যুৎ স্কুল ব্যবহার করছে, আর কতটা দফতর নিচ্ছে তার হিসাব রাখার জন্য বসবে ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট মিটার। যোগ-বিয়োগ করে বিল মেটাতে হবে স্কুলকে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সভাপতিরা জানাচ্ছেন, বিল সাশ্রয় হওয়াটাই বড় স্বস্তির। টাকা পেলে তো বাড়তি লাভ। হাটজনবাজারের রামপ্রসাদ রায় স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি পবিত্র দাস বলছেন, ‘‘স্কুলকে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল মেটাতে হত। সেটা অন্তত ৮০ শতাংশ কমবে।’’ এমনই আশা রাখছেন নগরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শীর্ষেন্দু রায়চৌধুরী ও যদু রায়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ ভট্টাচার্যেরা।
শুধু তিনটি স্কুল কেন?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিদ্যুৎমন্ত্রী হওয়ার পর স্কুল ও কলেজগুলিতে সৌর বিদ্যুৎ লাগানোর কথা ঘোষণা করেন। সেই সুযোগ পেতে সরাসরি বা সাংসদ মারফত নিজেদের স্কুলে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প লাগানোর জন্য আবেদন করেন প্রধান শিক্ষকেরা। আবেদন মঞ্জুর হলে তবে মিলবে সুযোগ।
তবে বিল সাশ্রয় ছাড়াও এই প্রকল্পের অন্য একটি উপকারিতা রয়েছে। রামপ্রসাদ রায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রবীর দাস বলছেন, ‘‘অচিরাচরিত শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা পড়ুয়ারা পাঠ্য বইয়ে পড়ছে। কী ভাবে সেটা হয়, হাতে কলমে জানতে স্কুলের ছাদে উঠলেই হল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy