মারমুখী: বাঁশ হাতে লড়াই। রবিবার সাঁইথিয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেতাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সাঁইথিয়ায় ডাকা বন্ধে সংঘর্ষ হল। বিবদমান দু’পক্ষের অনেকের হাতে ছিল বাঁশ, লাঠি। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি উচিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, শাসক দলেরই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ওই ঝামেলা হয়।
শুক্রবার ওই তৃণমূল নেতা ‘আক্রান্ত’ হয়েছিলেন। তার পিছনে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলকেই দায়ী করেছিল বিরোধী শিবির। তাদের বক্তব্য, এ দিনের ঘটনায় তারই প্রমাণ মিলল। সাঁইথিয়ায় ওই কাণ্ডে অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তবে দলের তরফে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করা হয়। এ দিন রামপুরহাটে মহামিছিলের ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে সাঁইথিয়া দলের অন্দরে দ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দেন অনুব্রত মণ্ডলও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে দলীয় কার্যালয় থেকে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন সাঁইথিয়ার শাউলডিহি গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য সাধন মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, মুখে গামছা বাঁধা দু’জন দুষ্কৃতী তাঁকে মোটরবাইক থেকে নামিয়ে বাঁশ দিয়ে মারধর করে। সাধনবাবুকে সেই রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ওই ঘটনার দায় বিরোধীদের ঘাড়ে চাপালেও, দলের অন্দরমহলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। একই দাবি ছিল বিরোধীদেরও। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ওই এলাকায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাবের আলি খানের অনুগামীদের সঙ্গে সাধনবাবুর অনুগামীদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সেই বিরোধের জেরেই সাধনবাবুর উপর হামলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাধনবাবুর উপরে হামলার প্রতিবাদ ও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে নাগরিক মঞ্চ ও ব্যবসায়ী সমিতির নামে বাগডাঙা মোড়ে রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাজার বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। বন্ধ সফল করতে সাধনবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত হরিষড়া পঞ্চায়েতের প্রধান বেদন ঘোষের নেতৃত্বে একটি মৌনী মিছিল বের হয়। একই সময় সাবের আলি খানের অনুগামী হিসেবে পরিচিত তৃণমূলের হরিষড়া অঞ্চল কমিটির সম্পাদক চিন্ময় ঘোষের নেতৃত্বে একটি মোটরবাইক মিছিল হয়। অভিযোগ, ওই মোটরবাইক মিছিলে সামিল লোকেরা ব্যবসায়ীদের দোকান খুলে রাখতে বলে। তা নিয়ে পুলিশের সামনে শাসক দলের দু’পক্ষের বচসা বাঁধে। শুরু হয় মারপিট। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বেদন ঘোষের কথায়, ‘‘সাধনবাবুর উপরে হামলার প্রতিবাদে বন্ধ ডেকে মিছিল করছিলাম। চিন্ময় ঘোষের নেতৃত্বে কয়েক জন আমাদের উপর চড়াও হয়।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে চিন্ময়বাবু জানিয়েছেন, ‘‘দল সাবের আলি খানকে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে লড়ছি। বন্ধ আমাদের দল সমর্থন করে না। তাই বিরোধিতা করেছি।’’ সাবের আলি খান অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সাধনবাবু বলেছেন, ‘‘মৌনী মিছিলে কিছু দুষ্কৃতী ঝামেলা করেছিল। এতেই প্রমাণ হয় কারা আমার উপরে হামলা করেছিল।’’ পুলিশ জানায়, এ দিন সন্ধে পর্যন্ত কোনও পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। সাধনবাবুর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy