Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কর্মাধ্যক্ষদের নাম আসছে মুখবন্ধ খামে

খামে কার নাম থাকছে, তা নিয়ে কৌতূহল চড় চড় করে বাড়ছে। কে হচ্ছেন?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

বোর্ড গঠনের এক বছর পরে পরশু, বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠিত হতে যাচ্ছে। জেলা নেতৃত্ব কর্মাধ্যক্ষ বাছাই করতে না পারায়, শেষ পর্যন্ত সেই কাজের ভার পড়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে। সেখান থেকেই কর্মাধ্যক্ষদের নাম লেখা মুখবন্ধ খাম আসবে জেলায়। তাই দিন যত এগোচ্ছে, কাকে কোন বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ করা হচ্ছে, তা নিয়ে জ্বল্পনা তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা জেলা থেকে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নাম পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বার রাজ্য নেতৃত্বেই কে কোন কর্মাধ্যক্ষ হবেন, কে কোনও স্থায়ী সমিতিতে থাকবেন, তা ঠিক করবেন। সে দিনই মুখবন্ধ খামে নেতৃত্ব নাম পাঠাবেন।’’

খামে কার নাম থাকছে, তা নিয়ে কৌতূহল চড় চড় করে বাড়ছে। কে হচ্ছেন?— এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরে। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি হোক, কিংবা জেলা পার্টি অফিসে— বড় নেতার সঙ্গে দেখা হলেই ছোট নেতা থেকে কর্মীদের একটাই প্রশ্ন— কে হচ্ছেন? বড় নেতাদের কেউ বলেছেন, ‘‘জানি না। নেতৃত্ব জানেন।’’ ঘনিষ্ঠ মহলে কেউ কেউ আবার বলেছেন, ‘‘আমরা পুরো অন্ধকারে। কর্মাধ্যক্ষদের নাম খামবন্দি হয়ে আসবে সে দিনই।’’

জেলা পরিষদে ন’টি কর্মাধ্যক্ষের পদ থাকলেও কৌতূহলের কেন্দ্রে ‘পূর্ত কার্য ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ’। জেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক অনেক কাজ ওই দফতরের মাধ্যমে হয়। তহবিলের অনেকখানি ওই দফতরের হাত ধরেই খরচ হয়। অনেকে মনে করেন, জেলা পরিষদে ক্ষমতার গুরুত্বের দিক থেকে সভাধিপতির পরেই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ।

ঘটনা হল, তৃণমূল পরিচালিত এই জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষ হতে চেয়ে একাধিক নাম দলের কাছে এসেছে। তার মধ্যে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হতে চেয়ে আগ্রহীদের মধ্যে যেমন নবীন নেতা রয়েছেন, তেমনই বর্ষীয়ান নেতা থেকে দলের দুর্দিনে লড়াই করা অনেকেই দাবিদার রয়েছেন। তাতেই জেলা নেতৃত্বের পক্ষে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে ওঠে।

স্থায়ী সমিতি গঠন না হওয়ার অন্য কারণও ছিল। বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকায় আটকে ছিল জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠন। গত জুলাইয়ে আদালতের রায়ে বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। তারপরেও জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠন একাধিক দাবিদারের চাপে আটকে থাকে।

সর্বসম্মত ভাবে কর্মাধ্যক্ষ বাছতে সমস্যায় পড়ে জেলা নেতৃত্ব বল পর্যবেক্ষকদের কোর্টে পাঠান। অগস্টের শেষ সপ্তাহে দুই মন্ত্রী তথা জেলার দুই দলীয় পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক ও শুভেন্দু অধিকারী কলকাতায় জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যের নিয়ে বৈঠক করেন। যদিও সমাধান হয়নি। বল ফেরত আসে জেলার কোর্টেই। জেলা পরিষদের দলনেতা হলধর মাহাতো বলেন, ‘‘দলীয় পর্যবেক্ষকেরা বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করে সর্বসম্মত ভাবে নাম ঠিক করতে বলেছিলেন। কিন্তু এখান থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। রাজ্য যে নাম পাঠাবে, তা সবাই মেনে নেবেন।’’

জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করে দিয়েছিলেন। সভাধিপতি বলেন, ‘‘প্রথমে স্থায়ী সমিতিগুলি গঠিত হবে। তারপরেই কর্মাধ্যক্ষ ঠিক করা হবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দীনেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন ঠিক হয়েছে বৃহস্পতিবার। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Zilla Parishad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE