Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National Youth Festival

যুব উৎসবে অতিথি কারা, প্রকাশ্যে ‘কোন্দল’

প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মঞ্চে থেকেই মন্ত্রী তথা দলের সংসদীয় জেলা সভাপতি এবং বিডিওর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রবীর গড়াই।

মাইক্রোফোনে ফোন ধরে রেকর্ডিং শোনাচ্ছেন প্রবীরবাবু। নিজস্ব চিত্র

মাইক্রোফোনে ফোন ধরে রেকর্ডিং শোনাচ্ছেন প্রবীরবাবু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোতুলপুর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০৩
Share: Save:

কিছু দিন আগেই নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতায় সিপিএমের পথসভায় গিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তৃণমূলের কোতুলপুর ব্লক সভাপতি প্রবীর গড়াইয়ের সেই কাজ নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। এ বার প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মঞ্চে থেকেই মন্ত্রী তথা দলের সংসদীয় জেলা সভাপতি এবং বিডিওর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। গোটা ঘটনায় তৃণমূলের পাশাপাশি অস্বস্তিতে পড়েছে কোতুলপুর ব্লক প্রশাসনও।

রবিবার কোতুলপুর ব্লক ছাত্র যুব উৎসবে এই ঘটনা ঘটে। কোতুলপুর ব্লক দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সূচনা করে মঞ্চে বক্তব্য রাখার পরে চলে যান পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। আর তার পরেই বক্তব্য রাখতে ওঠেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা কোতুলপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রবীরবাবু। শুরুতেই তিনি এই অনুষ্ঠানে ‘মিথ্যাচার’ হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। তাঁর ক্ষোভ, “মাধ্যমিকের এক কৃতী ছাত্রী ও স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতাকে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মন্ত্রীর নির্দেশে বিডিও শেষ মুহূর্তে তাঁদের বাদ দেন।”

মঞ্চেই প্রবীরবাবু দাবি করেন, কেন ওই আমন্ত্রিতদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে তা জানতে তিনি বিডিওকে ফোন করেছিলেন। একটি ফোন কলের রেকর্ডিং তিনি মাইক্রোফোনের সামনে চালাতে শুরু করেন। এরই মধ্যে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান বিডিও (কোতুলপুর) কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। তবে, তার আগেই বিশেষ অতিথি হিসেবে মনোনীত হয়েও বাতিল হওয়া ওই ছাত্রী ও যুব নেতাকে ডেকে নিজের পকেট থেকে নগদ টাকা তাঁদের হাতে তুলে দেন প্রবীরবাবু।

নিজের বক্তব্যে প্রবীরবাবু এ দিন বলেন, “এই ঘটনা অন্যায়। ছাত্রযুবর অনুষ্ঠানে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সর্বত্রই এই মিথ্যাচার চলছে।” অনুষ্ঠান শেষে এ নিয়ে প্রবীরবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বিশেষ অতিথি মনোনীত করেও তাঁদের বাতিল করে দেওয়া অন্যায়। কেবল মন্ত্রীর পছন্দ না হওয়াতে তাঁদের শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয়। এই ঘটনা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই প্রতিবাদ করেছি।”

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিডিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে মুখ খুলেছেন শ্যামলবাবু। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে কাকে অতিথি করা হবে সেটা বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঠিক করবেন। এ নিয়ে প্রবীরবাবুর মতামতের গুরুত্ব নেই। এ দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে উনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা নিন্দনীয়। আমি রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানাব।”

কয়েক সপ্তাহ আগেই কোতুলপুরে সিপিএমের একটি পথসভা ছিল নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। সেই সভায় হঠাৎই পৌঁছে গিয়ে বক্তৃতা দেন প্রবীরবাবু। নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ার আহ্বানও দেন সিপিএমকে। ওই ঘটনার পরেও প্রবীরবাবুর উপরে রুষ্ট হয়েছিলেন শ্যামলবাবু। তিনি রাজ্য নেতৃত্বকে কাছে ঘটনাটি জানান। শ্যামলবাবু বলেন, “প্রবীরবাবুর বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়ার রাজ্য নেতৃত্ব নেবেন।” প্রবীরবাবুর বক্তব্য, “আমি অন্যায় কখনও মেনে নেব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Youth Festival TMC Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE