উল্লাস: জয়ীদের সঙ্গে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের নিরিখে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পুরসভার ১৩টি ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে রঘুনাথপুর ‘সিল্ক উইভার্স কো-অপারেটিভ’-এর পরিচালন সমিতির ভোটে জয় পেলেন তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা। ভোটে ন’টি আসনের মধ্যে সাতটিতে জয়ী তাঁরা।
শুক্রবার জয়ী সাত জনকে সংবর্ধনা দিয়ে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের ভবেশ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘‘সমবায়ের ভোট হয়েছে ব্যালটে। ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট, ইভিএমে কারচুপি করে লোকসভা ভোটে জিতেছে বিজেপি।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির পাল্টা দাবি, সমবায় ভোটে লড়াই হয়েছে বিনা প্রতীকে। সেখানে সমবায়ের সদস্যেরা, যাঁদের যোগ্য বলে মনে করেছেন, জিতিয়েছেন।
রঘুনাথপুর শহরের তসর শিল্পীদের উন্নয়নের কাজকর্ম পরিচালিত হয় ওই সমবায়ের মাধ্যমে। তসরের জামাকাপড় এবং শাড়ির একটি বিক্রয়কেন্দ্রও চালায় সমবায়। সূত্রের দাবি, অতীতে পরিচালন সমিতির নির্বাচনের সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি সম্পর্ক ছিল না। তবে এ বারের ছবিটা ছিল অন্য রকম। সব আসনেই সমর্থিত প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূলের তরফে প্রচার চালিয়েছিলেন পুরপ্রধান এবং দলের রঘুনাথপুর শহর কমিটির সভাপতি সুধীর বাউরি। তাই সমবায় নির্বাচনের ফলাফল কী হয়, তা নিয়ে উত্তেজনা ছিল দুই শিবিরেই।
সমবায়টির সদস্য সংখ্যা ৫৩৭। নির্বাচনের ‘রিটার্নিং অফিসার’ তথা সমবায়ের ম্যানেজার সমরেশ পাল জানান, ‘জেলা হস্ততাঁত উন্নয়ন বিভাগের পরিচালনায় শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার ভোট দেন সাড়ে চারশোর কিছু বেশি সদস্য। রাত ১০টা নাগাদ ফল ঘোষণা হয়। তৃণমূল সমর্থিতেরা বাদে, বাকি দু’টি আসনের একটিতে বিজেপি সমর্থিত, অন্যটিতে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থী জেতেন। সমবায় সূত্রের দাবি, তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ের ব্যবধান খুব একটা বেশি নয়।
তবে ভোটের ফল বেরোতেই উচ্ছ্বাস শাসক-শিবিরে। পুরপ্রধান ভবেশবাবুর দাবি, ‘‘মাত্র দু’মাস আগে লোকসভা ভোট হয়েছিল। সেই ভোটে যে সমস্ত ওয়ার্ডে আমরা পিছিয়ে ছিলাম, সেখানকার তসর শিল্পীরা এ বার আমাদের সমর্থন করেছেন।” কিন্তু এলাকার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, এই নির্বাচনের ফলাফলকে ‘সামগ্রিক’ চেহারায় দেখা ঠিক হবে না। কারণ, ভোটারেরা পুরসভার পাঁচটির ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পুরসভা তেরো ওয়ার্ডের। তবে এই ফলের জেরে এলাকার তৃণমূল কিছুটা বাড়তি ‘অক্সিজেন’ পেতে পারে।
নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন বিজেপির শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি স্বপ্নেশ দাস। হেরে গিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তসর সমবায়ের নির্বাচন পুরোপুরি অরাজনৈতিক। এখানে কোনও দলেরই প্রতীক ছিল না। তসর শিল্পীরা যাঁদের যোগ্য মনে করেছেন, তাঁদের জিতিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy