Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অপহরণের অভিযোগ শাসকদলের

এক তৃণমূল কর্মীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল বরাবাজারে। বুধবার রাতে চানাচুর ব্যবসায়ী সন্তোষ মাহাতোকে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যায় বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। তাঁর পিকআপ ভ্যানের উপরে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সাঁটিয়ে দেওয়া ছিল একটি চিঠি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বরাবাজার শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

এক তৃণমূল কর্মীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল বরাবাজারে। বুধবার রাতে চানাচুর ব্যবসায়ী সন্তোষ মাহাতোকে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যায় বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। তাঁর পিকআপ ভ্যানের উপরে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সাঁটিয়ে দেওয়া ছিল একটি চিঠি। যা দেখে, তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সন্তোষবাবুকে অপহরণ করেছে। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য তা মানতে চাননি।

সন্তোষবাবুর বাড়ি বরাবাজারের ভাগাবাঁধ পঞ্চায়েত এলাকার সোনাডুংরি গ্রামে। তাঁর ভাই দেবেন মাহাতো পুলিশের কাছে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সব রকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দেবেন বলেন, ‘‘দাদা নিজেই পিকআপভ্যান চালিয়ে নানা জায়গায় ব্যবসার কাজে যেত। কোনও কোনও দিন রাতেও বাড়ি ফিরত না। তাই বুধবার রাতে দাদা না ফেরায় চিন্তা হয়নি। এ দিন সকালে গ্রামের লোকেরা কিছু দূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাদার পিকআপভ্যান পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দেন। গিয়ে দেখি দাদা নেই। তারপর থেকে ফোনেও দাদাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কারা এই কাণ্ড করল, বুঝতে পারছি না।’’ ওই গাড়িতেই মেলে হুমকি-পত্র।

সাদা কাগজে পেনে লেখা হুমকি-পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, তৃণমূল তাদের দলের (কোন দল তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি) সদস্যদের অপহরণ করায় তারা পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতে পারেনি। সেই রকম তৃণমূলের এক এক জন কর্মীকে অপহরণ করা হবে। সরকারের ক্ষমতা থাকলে ওই কর্মীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাক। মুক্তিপণ হিসাবে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে। ওই চিঠির উল্লেখ করে বরাবাজার ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রতুল মাহাতো অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই দলীয় কর্মীকে অপহরণ করেছে।’’

ঘটনা হল, ১৬ আসনের ভাগাবাঁধ পঞ্চায়েতে ভোটে তৃণমূল ৭ এবং বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি মোট ৯টি আসন পেয়েছিল। বোর্ড গঠনের দিন বিরোধীরা দাবি করে, পুরুলিয়ার গোপন ডেরা থেকে ফেরার পথে তাঁদের সদস্যেদের শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, ওই সদস্যেরা নিজেরাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। পরে অবশ্য ওই বিরোধী সদস্যেরা অভিযোগ তোলেন, তাঁদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে জোর করে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সে দিন বিরোধী সদস্যদের অনুপস্থিতিতে ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল।

ভাগাবাঁধের বাসিন্দা কংগ্রেসের বরাবাজার ব্লক সভাপতি ভগীরথ মাহাতো এ দিন দাবি করেন, ‘‘ব্যবসায়ী হিসাবেই সন্তোষবাবুর পরিচিতি। তাঁর নিখোঁজের পিছনে রাজনীতির কিছু নেই।’’ বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করছেন, অপহরণ করলে কেউ ফলাও করে নিজেদের পরিচয় দেয়? তাঁদের দলের বদনাম করতেই কেউ এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘‘আমরা অপহরণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ওটা তৃণমূলের সংস্কৃতি। এই ঘটনার পিছনে অন্য কারণ থাকতে পারে।’’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বিদ্যাসাগরবাবুর দাবি খারিজ করে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kidnap TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE