মুশকিল: তৈরি হচ্ছে নানা পরিকাঠামো। তার পরেও অধরা গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়
জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র মুকুটমণিপুর। পর্যটকদের উৎসাহ ক্রমশ বাড়ছে এই জায়গাটি নিয়ে। কিন্তু নগদ টাকায় টান পড়লে ফাঁপরে পড়েন তাঁরা। এলাকায় কোনও এটিএম নেই। ছুটতে হয় দু’কিলোমিটার দূরে, গোড়াবাড়িতে। সেখানেও আবার সব সময় টাকা পাওয়া যায় না বলে অনেকেই নালিশ করেন। তখন যেতে হয় সটান খাতড়া— দশ কিলোমিটার দূরে।
পর্যটন কেন্দ্র সংলগ্ন জায়গায় এটিএম চালু করার দাবি অনেক দিনেরই। পর্যটকদের মতোই মুশকিলে পড়েন বাসিন্দারাও। আশপাশের এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিত মুর্মু ও জগন্নাথ মাহাতোরা বলেন, ‘‘আপদে বিপদে হাতের কাছে এটিএম না থাকায় খুবই অসুবিধা হয়।’’ মুকুটমণিপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটির (এমডিএ) সদস্য-সচিব তথা মহকুমাশাসক (খাতড়া) রাজু মিশ্র আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘এই ব্যাপারে কয়েকটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী মরসুমের আগেই পর্যটনকেন্দ্র সংলগ্ন কোনও একটি জায়গায় এটিএম বসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
মুকুটমণিপু্র, বাঁকুড়া জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম বড় পর্যটন কেন্দ্র। বিরাট মাটির বাঁধ রয়েছে এখানে। সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট ছোট টিলা। গাছগাছালির অপরূপ সৌন্দর্য। পর্যটনকেন্দ্র ঘিরে ৬টি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি লজ রয়েছে। মুকুটমণিপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি পর্যটনকেন্দ্রটিকে ঢেলে সাজাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও এটিএমের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর খামতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এটিএম না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ করছিলেন কলকাতার দমদম থেকে আসা জয়প্রকাশ দাস ও প্রীতিলতা দাস। বছর আটের ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন তাঁরা। জয়প্রকাশবাবুর কথায়, ‘‘ইন্টারনেটে বুকিং করে সরকারি যুব আসাবে উঠেছি। ঘর সাজানো কাঠের বেশ কিছু জিনিস কিনতে গিয়ে অল্প কিছু টাকা কম পড়ে গিয়েছিল। স্বামী-স্ত্রী দু’জনের কাছেই এটিএম কার্ড ছিল। ভাবলাম এটিএম থেকে টাকা তুলে আনব। কিন্তু দোকানের মালিক বললেন, দু’কিলোমিটারের আগে কোনও এটিএম নেই।’’ তিনি জানাচ্ছেন, অল্প কিছু টাকা তোলার জন্য ৬০ টাকা টোটো ভাড়া গুণতে হয়েছে। জয়প্রকাশবাবু বলেন, ‘‘এত বড় একটা পর্যটনকেন্দ্রে এটিএম নেই দেখে অবাক হয়ে গেলাম।’’
মুকুটমণিপুর লজ ও হোটেল মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপকুমার সাহু, সহসভাপতি সঞ্জীব দত্তরা বলেন, ‘‘এটিএম না থাকায় পর্যটকেরা খুবই সমস্যায় পড়েন। এখানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১৫টি লজ রয়েছে। সেখানকার কোনও না কোনও পর্যটক প্রতিদিন এটিএম কার্ড নিয়ে টাকার জন্য ছোটাছুটি করতে বাধ্য হন।’’ ওই এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ভাল মেলে না। ফলে কার্ডে লেনদেনের যন্ত্র (পিওএস) ইচ্ছা থাকলেও তাঁরা চালু করতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy