Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চড় রিকশা চালককে, প্রহৃত ট্রাফিক পুলিশ

সোমবার সকাল। সপ্তাহের প্রথম দিন শহরের ব্যাঙ্ক রোড এবং জে এল ব্যানার্জি রোডের মহাজনপট্টি মোড়ে যান-নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন ছিলেন রামপুরহাট শহরের ট্রাফিক অফিসার তুহিন ঝা। পুলিশ সূত্রে খবর, মহাজনপট্টি মোড়ের কাছে একটি ভ্যানরিকশা দাঁড়িয়েছিল।

হুঁশিয়ারি: পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। সোমবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

হুঁশিয়ারি: পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। সোমবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

ট্রাফিক পুলিশের থাপ্পড়ে যন্ত্রচালিত ভ্যানরিকশা চালক বেহুঁশ হওয়ার খবর ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল রামপুরহাটের ব্যস্ত রাজপথে। অভিযোগ, মারধর করা হয় ওই পুলিশকর্মীকেও। অবরোধ হয় রাস্তায়।

সোমবার সকাল। সপ্তাহের প্রথম দিন শহরের ব্যাঙ্ক রোড এবং জে এল ব্যানার্জি রোডের মহাজনপট্টি মোড়ে যান-নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন ছিলেন রামপুরহাট শহরের ট্রাফিক অফিসার তুহিন ঝা। পুলিশ সূত্রে খবর, মহাজনপট্টি মোড়ের কাছে একটি ভ্যানরিকশা দাঁড়িয়েছিল। সে জন্য যানচলাচলে সমস্যা হচ্ছিল। ভ্যানের চালকের খোঁজ করেন ওই পুলিশকর্মী-সহ কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু সেই মুহূর্তে তাঁর হদিস মেলেনি। অভিযোগ, এর পরেই ওই রিকশার চাকার হাওয়া খুলতে যায় পুলিশ। তখনই চালক সুশীল লেট সেখানে পৌঁছন। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় আচমকা তুহিনবাবু ওই ভ্যানচালকের গালে সজোরে চড় কষিয়ে দেন।

মাড়গ্রাম থানার নতুনগ্রামের বাসিন্দা সুশীলবাবু পরে বলেন, ‘‘পুলিশ আমার রিকশার চাকার হাওয়া খুলে দিচ্ছিল। কারণ জানতে চাইলে আমাকে থাপ্পড় মারে পুলিশ। মাটিতে পড়ে যাই। কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞানও ছিল না। আশপাশের লোকজন মুখে-মাথায় জল দেন। তার পরে হুঁশ ফেরে।’’ পুলিশের মারধরে ভ্যানচালক বেহুঁশ হয়েছেন— এমন খবরে অন্য ভ্যানচালকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, ভ্যানচালকদের পাশাপাশি কয়েক জন পথচারী, স্থানীয় দোকানদারদের একাংশ ওই ট্রাফিক অফিসারকে মারধর করেন। রাস্তায় ভ্যানরিকশা দাঁড় করিয়ে কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করেন অন্য চালকেরা। রামপুরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে। ওঠে অবরোধও।

ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, শহরের ব্যস্ত রাস্তা ব্যাঙ্ক রোড, জে এল ব্যানার্জি রোড, দেশবন্ধু রোড, ধূলাডাঙা রোড, মহাজনপট্টি মোড়, কামারপট্টি মোড়, ভাঁড়শালাপাড়া মোড়, ডাকবাংলা মোড় থেকে পাঁচমাথা মোড়, সমবায় ব্যাঙ্ক যাওয়ার রাস্তা, সুপারের গলি, কোর্টের গলিতে যানজট ছড়াচ্ছে টোটো, যন্ত্রচালিত ভ্যানরিকশা। ট্রাফিক পুলিশের দাবি, রামপুরহাটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যন্ত্রচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল নিয়ে সানঘাটাপাড়া ফড়িংয়ের মিষ্টির দোকানের মোড় থেকে কামারপট্টি মোড়, ব্যাঙ্ক রোডে মিতালি সঙ্ঘের মোড় থেকে গণেশ মন্দির বা হাটতলা ঢোকার মোড় হয়ে মহাজনপট্টি মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন দোকানে আসছেন ক্রেতারা। ট্রাফিক নিয়ম ভেঙে সে সব দোকানের সামনের রাস্তাতেই রিকশা, মোটরসাইকেল রেখে দিচ্ছেন তাঁরা। পাঁচমাথা মোড়ে নির্মীয়মান ওয়াচ টাওয়ার, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে বালি, পাথর, ইট ফেলে রাখায় যানচলাচলে আরও বেশি সমস্যা হয়।

ট্রাফিক পুলিশের দাবি, অফিসের সময়ে রাস্তার ধারে রিকশা, মোটরসাইকেল না রাখতে একাধিক বার প্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু তা না মেনে গণেশ মন্দির থেকে মহাজনপট্টি মোড়, মহাজনপট্টি মোড় থেকে কামারপট্টি মোড়ের পাশে রাস্তার পাশে প্রতি দিন সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত সে সব রাখা হচ্ছে। সে জন্য হচ্ছে যানজট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Traffic Police Lynched slap
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE