বিদ্ধ: ছাতনার খ়ড়বনা মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
শরসজ্জা নিয়ে ছাতনার খ়ড়বনা মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন বট আর অশ্বত্থ। গাঁটে ব্যথার তেল, সভা-সমাবেশ-মিটিং-মিছিল, স্কুলে ভর্তির তারিখ। তালড্যাংরার শিবডাঙা মোড় থেকে খাতড়ার সুপুর। জেলার বিভিন্ন জায়গায় গাছ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। চুপ প্রশাসন। চুপ পঞ্চায়েত। রাস্তা সম্প্রসারণ করতে গিয়ে কোপ পড়ছে গাছে। যেগুলি থেকে যাচ্ছে, তারও এই হাল দেখে উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও গাছে বিজ্ঞাপন লাগাতে গেলে তাদের থেকে অনুমতি নিতে হয়। সে ক্ষেত্রেও গাছের গায়ে লোহা বা পেরেক পোঁতা যায় না। আবেদন বিচার করে দড়ি দিয়ে বিজ্ঞাপন লাগাতে দেওয়া হয়। তাহলে আইন-ভাঙা বিজ্ঞাপনদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয় না? নজরদারিও কি নেই? প্রশ্ন উঠছে। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের আধিকারিক ভাস্কর জে ভি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তবে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়াটা যে ঠিক নয়, সেই ব্যাপারে আমরা মানুষকে সচেতন করব।’’
গাছ আর কাঠ যে এক নয়, গাছেরও প্রাণ আছে— সেটা এখন একেবারে সাধারণ জ্ঞান। পেরেক পুঁতলে গাছ চিৎকার করে না। কিন্তু, তারও আয়ু কমে যায়। এ কথা জানাচ্ছেন একটি স্কুলের উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষিকা রীতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পেরেক পুঁতলে গাছে নানা রকমের সংক্রমণ হতে পারে। ফুল-ফল হতেও সমস্যা দেখা দেয়।’’ প্রবীণ স্কুল শিক্ষক শঙ্কর পাত্রের কথায়, ‘‘প্রতি বছর আবহাওয়া বলে দিচ্ছে, প্রকৃতি এই সমস্ত অত্যাচার মানছে না। সময়ে বর্ষা হচ্ছে না। আবার বন্যায় ঘরবাড়ি ডুবছে। এর পরেও যদি সবাই শিক্ষা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যত আরও ভয়ানক হতে পারে।’’
ছাতনার খড়বনা মোড় যেখানে, সেই ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মানসী রক্ষিত বলেন, ‘‘সদ্য আমাদের বোর্ড গঠন হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই দেখছি ওই গাছগুলিতে হোর্ডিং ঝুলছে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতাদের হোর্ডিং খুলে নিতে বলব।’’ তাঁর আশ্বাস, নতুন করে কেউ যাতে বিজ্ঞাপন না টাঙান, সেই ব্যাপারেও এ বার নজর রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy