Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Crime

বৃদ্ধা-খুনের নালিশ, ধৃত বউমা ও বেয়ান

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লতাদেবী বাঁশের ঝুড়িঝোড়া তৈরি করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করতেন।

ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়পুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০৬
Share: Save:

পড়শির মুরগি উঠোনে ঢুকে পড়তেই চিৎকার চেঁচামিচি শুরু হয়েছিল। অচিরেই ঘুরে গেল বচসার কেন্দ্রবিন্দু। বৃদ্ধা শাশুড়িকে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ উঠল বৌমা ও বেয়ানের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে বাঁকুড়ার জয়পুর থানার রাউতখণ্ডের ঘাটশহরের ঘটনা। নিহত বৃদ্ধার নাম লতা ধাড়া (৭০)। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর বড় বউমা মামনি ধাড়া ও মামনির মা প্রতিমা মণ্ডলকে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লতাদেবী বাঁশের ঝুড়িঝোড়া তৈরি করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করতেন। একা থাকতেন মাটির একটি ঘরে। পাশের ঘরেই বড় ছেলে বিজয়ের সংসার। ছোট ছেলে সুজয় পরিবার নিয়ে থাকেন অল্প দূরে একটি বাড়িতে। পড়শিদের কয়েকজন দাবি করেছেন, বড় ছেলের পরিবারের সঙ্গে ভাল বনিবনা ছিল না লতাদেবীর। নিজেই রান্না করে খেতেন। অসুস্থ হলে ছোট ছেলের ঘরে গিয়ে খেয়ে আসতেন।

বৃদ্ধার পড়শি স্বরূপ দাস বলেন, ‘‘ব্যবহার অত্যন্ত ভাল। আশপাশের গ্রামের মানুষও তাঁকে সম্মান করতেন। মাঝেমাঝেই বড় বউমা আর তার মেয়েরা বৃদ্ধাকে গালিগালাজ করত।’’ পড়শিদের থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, উঠোনে ধান শুকোতে দিয়েছিলেন মামনি। অন্য বাড়ির দু’টি মুরগি ঢুকে নোংরা করায় গালিগালাজ শুরু করেন তিনি। জয়পুর মেলা উপলক্ষে বিষ্ণুপুরের রাধানগর থেকে মেয়ের বাড়িতে এসেছিলেন মামনির মা প্রতিমা। তিনিও যোগ দেন। ঝামেলা থামাতে বলায় রোষ গিয়ে পড়ে লতাদেবীর উপরে।

ছোট ছেলে সুজয় ধাড়া জয়পুর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন, বচসার মাঝে ওই দু’জন লতাদেবীর গলা টিপে ধরেন। পড়শিরা এসে উদ্ধার করেন বৃদ্ধাকে জয়পুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। চিকিৎসক জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরেই দুই অভিযুক্তকে আটক করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তাঁদের।

লতাদেবীর বড় ছেলে বিজয় ধাড়া পোশাক বিক্রি করেন। পসরা নিয়ে এ দিন হাটে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মুরগি ঢুকে পড়া নিয়ে একটা গন্ডগোল হয়েছিল। মা আর বউয়ের ধস্তাধস্তির খবর পেয়েই আমি ছুটে এসেছিলাম।’’ ছোট ছেলে সুজয় বলেন, “সকালেও মাকে সুস্থ দেখে গিয়েছি। মা তখন নিজের ঘরে ন্যাতা দিচ্ছিলেন। দাদা বাইরে ছিল। সেই সুযোগে মাকে খুন করল বৌদি আর তার মা। ওরা কঠোর শাস্তি পাক।”

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী জানান, বৃদ্ধার দেহ বিষ্ণুপুর হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়না-তদন্তের জন্য। তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE