সিউড়ির দলীয় কার্যালয়ে চলছে বৈঠক। রয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও।— নিজস্ব চিত্র
দলের সিদ্ধান্ত মেনে সিউড়ি পুরসভার পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সিউড়ি দলীয় কার্যালয়ে পুরসভার সব কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল নিজেই জানান সে কথা। অনুব্রতর কথায়, ‘‘দল কলেবরে বেড়েছে। উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়কে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বার থেকে তিনি দলের কাজ দেখবেন।’’
তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরদের আর্জি ছিল, পুরপ্রধানের দায়িত্ব থেকে সরানো হোক উজ্জ্বলবাবুকে। সোমবার পুরসভার ১৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে উপপুরপ্রাধন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়-সহ ১৫ জন মিলিত ভাবে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে রীতিমতো চিঠি দিয়ে পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নালিশ জানান। তাঁদের অভিযোগ ছিল, উন্নয়ন থমকে গিয়েছে ওই শহরে। প্রকৃত পুর পরিষেবা পাচ্ছেন না শহরবাসী। স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
তৃণমূলের একটি সূত্রের মত, কী হতে চলেছে, সে দিনই জলের মতো পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল। তারপর এ দিনের ঘোষণা ছিল সময়ের অপেক্ষা। উজ্জ্বলবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ অবশ্য এই প্রথম নয়। গত পুরভোটের আগে পুরপরিষেবা নিয়ে যথেষ্ঠ ক্ষোভ ছিল সিউড়ি শহরে। সঙ্গে ছিল তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে জলপ্রকল্প ও বস্তি উন্নয়নে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। তবে তার কোনওটিরই কোনও প্রমাণ কখনও মেলেনি। এত অভিযোগের পরেও গত পুরভোটে যথেষ্ঠ বড় ব্যবধানে বিপক্ষকে হারিয়ে চতুর্থবার কাউন্সিলর এবং পরে পুরপ্রধান হন উজ্জ্বলবাবু। সে বার তৃণমূল ১৯টি আসনের ১৫টিতে জিতলেও পরে তিন কংগ্রেস এবং এক বিজেপি কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়. পুরসভা বিরোধী শূন্য হয়ে যায়। প্রথম বিতর্ক শুরু হয় বিধানসভা ভোটে অশোক চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূল প্রার্থী করার কথা চাউর হওয়ার পরেই। খোদ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডেই অশোকবাবুকে ‘বাহিরাগত’ তকমা দিয়ে পোস্টার পড়ে! এরপরে তৃণমূলের অন্দরেই গুঞ্জন ওঠে, ওই কাজের পেছনে হাত রয়েছে উজ্জ্বলবাবুর। শহরে অবৈধ দখলদারি ও জঞ্জাল পরিস্কার নিয়েও প্রশাসনের কর্তাদের অসন্তোষ ছিল। তার উপরে যোগ হয় কাউন্সিলরদের নালিশ।
এই পরিস্থিতিতে অনুব্রত জানান, আপাতত ১১ জনের একটি কমিটি পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজের দেখাশোনা করবে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেকের মধ্যে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত করা হতে পারে। এখন উপপুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy