Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোথাও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘চিতা’, কোথাও ‘বাবা’

মাদক বিরোধী অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর গাঁজাও। বিভিন্ন এলাকায় নাম বদলেছে তারও। কোথাও ‘হাবল’, কোথাও ‘বাবা’, কোথাও ‘কালাবাবা’। মশলা নেশার নাম সেখানে ‘মাকড়া’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

কোথাও ‘চিতা’, কোথাও ‘গরদ’, কেউ বলে ‘পাউডার’— সবই আদপে এক। রামপুরহাটের আশপাশে মাদকাসক্তদের কাছে ‘ব্রাউন সুগার’-এর ‘কোড-নেম’ এমনই।

রামপুরহাট মহকুমার মুরারই থানার রাজগ্রামই হোক, নলহাটির লোহাপুর বা মল্লারপুর থানার কোট— মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে সে সব জায়গা থেকে কয়েক জন মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রেতাদের ধরে ব্রাউন সুগারের এ সব ‘ছদ্মনামের’ কথা জেনেছেন তদন্তকারীরা। মাদক বিরোধী অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর গাঁজাও। বিভিন্ন এলাকায় নাম বদলেছে তারও। কোথাও ‘হাবল’, কোথাও ‘বাবা’, কোথাও ‘কালাবাবা’। মশলা নেশার নাম সেখানে ‘মাকড়া’।

মাদক রুখতে মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে বড় সাফল্য পেয়েছে পুলিশ। রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মিতুনকুমার দে-র নেতৃত্বে নলহাটি থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে লোহাপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রচুর মাদক সামগ্রী-সহ চার কারবারী ও মাদকাসক্তকে ধরেছে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানান, মিলেছে ২৫ কিলোগ্রাম গাঁজা, ২৫০ গ্রাম ব্রাউন সুগার। পুলিশ জানায় আটক তিন জনের বাড়ি লোহাপুর বাজার ও লোহাপুর শেখ পাড়ায়। অন্য জনের বাড়ি লোহাপুর লাগোয়া রনহা গ্রামের চৌধুরীপাড়ায়।

লোহাপুর এলাকা বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পুলিশের হাতে ধরা পড়া চার জনের মধ্যে এক জন মুটে। এক জনের বাবা অসামাজিক কাজকর্মে জড়িত। অন্য দু’জনের এক জন চাষি পরিবারের ছেলে। অন্য জন দিনমজুর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লোহাপুরে বুছর দু’য়েক ধরে মাদক বিক্রি হচ্ছে। এ জন্য মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে এলাকার অনেক অল্পবয়সী ছেলেরা। লোহাপুর বাজার, বাজার সংলগ্ন পরিত্যক্ত চালকল এলাকায় লুকিয়ে চুরিয়ে ওই কারবার চলছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মাদক কারবারীরা মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, লালগোলা এলাকা থেকে নেশাজাতীয় জিনিস কিনে আনে। ব্রাউন সুগার নির্দিষ্ট কোনও ঠেকে বিক্রি হয় না। ফোনে কথা বলার পর তা কোনও জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। সে জন্য জানা দরকার সংশ্লিষ্ট এলাকায় সেটির কোড-নেম। জায়গায় জায়গায় সেই নাম বদলে যায়। কোথাও ‘পাউডার’, কোথায় ‘চিতা’ বা ‘গরদ’।

রাজগ্রাম, রাজগ্রাম বাজার এবং আম্বুয়া গ্রামেও হদিস মিলেছে কয়েক জন মাগকাসক্তের। ধরা পড়েছে বিক্রেতারা। মল্লারপুরের কোট গ্রামের দু’জনও একই কারণে গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ ক্রেতা সেজেই তাদের ধরে। মল্লারপুরে মাদকাসক্তদের বাড়বাড়ন্তে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছে পুলিশ। রাজগ্রামে মাদক বিরোধী প্রচারে এগিয়েছে বিভিন্ন সংস্থা। লোহাপুর নাগরিক কমিটির সম্পাদক মসিউর রহমান ববি জানান, নেশামুক্ত সমাজ গড়তে এলাকার সমস্ত স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drug
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE