বিশ্বভারতীর শান্তশ্রী ছাত্রাবাসে। মধ্যমণি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ছাত্রাবাসে ঘুরেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তখনই নজরে আসে ছাত্রাবাসগুলির অপরিষ্কার অবস্থার কথা। সিদ্ধান্ত নেন, প্রতি মাসেই বিশ্বভারতীর ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসগুলিতে একটি করে সাফাই অভিযান হবে। বৃহস্পতিবার বিনয়ভবন সংলগ্ন শান্তিশ্রী ছাত্রনিবাস ও সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর কর্মী, অধ্যাপক, পড়ুয়া থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের আধিকারিকেরা। উপাচার্য নিজেও ঝাড়ু দেন। তিনি বলেন, ‘‘এক দিনে সব হবে না। কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তবে নিয়মিত সাফাইয়ের কাজ হয়নি। একটা চেষ্টা শুরু হল আজ।’’
অভিযান চলাকালীন চুক্তিভিত্তিক সাফাই কর্মীরা উপাচার্যকে তাঁদের কিছু দাবি জানান। বর্তমানে দু’জন সুপারভাইজার সহ মোট ৪২ জন চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী রয়েছেন। যাঁদের কাজ হল, বিশ্বভারতীর প্রায় ২৬টি ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসের বিভিন্ন অংশ পরিষ্কার রাখা। কিন্তু তাঁরা সংখ্যায় অনেক কম। সেই তুলনায় কাজ বেশি করতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। দিনে চার ঘণ্টা কাজ করে পান ১২৫ টাকা। সাফাইকর্মীদের মধ্যে পলাশ হাজরা, প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘এত কম টাকায় সংসার চলে না। তার পর আবার টাকা নিয়মিত পাই না। সে কথা উপাচার্যকে জানিয়েছি।’’ সুপারভাইজার প্রসেনজিৎ হাজরা জানান, আগেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু, কাজ হয়নি। তিনিও মেনেছেন, এই ক’জন কর্মী মিলে অনেক কাজ করতে হয়। আবার টাকাও অনেক কম পান। কাজের সময় চার ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে আট ঘণ্টা করার কথাও জানিয়েছেন। তাতে কাজের সময় বাড়বে। বাড়বে আয়ও। এই প্রসঙ্গে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছি। সব পক্ষের কথাই শুনেছি।’’ যদিও পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন, ঠিক মতো সাফাই করেন না তাঁরা।
সাফাই অভিযানে বিশ্বভারতীকে সহযোগিতা করেছে জেলা প্রশাসনও। বোলপুরের মহকুমাশাসক অভ্ৰ অধিকারীও এ দিন উপস্থিত ছিলেন। পুরসভার গাড়ি এসে আবর্জনা তুলে নিয়ে যায়। উপাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছতা অভিযানে রাজ্য সরকারেরও সহযোগিতা পাচ্ছি। বিশ্বভারতী পরিবারের সব সদস্য, মহকুমা প্রশাসন এবং পুরসভার একত্রিত চেষ্টা এটা। এর মধ্যে দিয়ে পড়ুয়ারাও উৎসাহ পাবে।’’ শান্তিশ্রী ছাত্র নিবাসে এই মুহূর্তে প্রায় ১২০ জন আবাসিক রয়েছেন। অন্য ছাত্রাবাস থেকেও কিছু ছাত্র এ দিনের সাফাই অভিযানে যোগ দেয়। সুকমল দালাল, কেশব চৌধুরী, অরুণোদয় রায়, অনুপম মণ্ডলদের কথায়, ‘‘এই ভাবে নিয়মিত সাফাই অভিযান হলে সত্যিই ভাল হবে। আমরাও সচেতন হতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy