রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনেই সাংবাদিকদের সামনে বিশ্বভারতীর সংস্কৃতির সমালোচনা করলেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। সকালে ব্রহ্ম উপাসনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুশান্তবাবু বলেন, “গুরুদেবের ভাবনা থেকে আমরা অনেক সরে এসেছে। এখানে ডিগ্রির বেশি প্রাধান্য হয়ে গেছে, আদর্শের নয়।’’
কেন এই সমালোচনা?
উপাচার্য ইঙ্গিত দেন বিশ্বভারতীকে জ্ঞান চর্চার প্রতিষ্ঠান হিসাবে না দেখে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে শান্তিনিকতনের একাংশ। তিনি বলেন, ‘‘বীরভূম জেলার একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়য় এটা। আড়াইশো কোটি টাকা বছরে খরচ হয় এখানে। তাই অনেক মনে করেন বিশ্বভারতী খোরাক যোগানের জায়গা। কিন্তু তা নয়। এটা রবীন্দ্র ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু, পীঠস্থান।’’ তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় লোকের ‘‘গায়ের জোর’’ বেশি। তাই বিশ্বভারতীর থেকে প্রত্যাশাও বেশি। ‘‘বিশ্বভারতীতে পরিবারতন্ত্রের একটা ট্র্যাডিশন চলে আসছে,” বলেন উপাচার্য।
কী ভাবে উপাচার্য এই পরিবারতন্ত্রের মোকাবিলা করবেন?
উপাচার্যের উত্তর, ‘‘মেধার ভিত্তিতে আমরা পঠনপাঠন শুরু করেছি। যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ শুরু করেছি।” শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক পরিবারের অনেকগুলিতেই একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি বিশ্বভারতীর নানা পদে রয়েছেন। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছাত্রভর্তি কিংবা চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তিতে প্রায়ই সমস্যা তৈরি হয় বলে অতীতেও বারবার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন পদে নিয়োগের বিষয় নিয়ে একাধিক মামলা চলছে। নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও করছে কেন্দ্রীয় মানব উন্নয়ন মন্ত্রকের নিযুক্ত একটি দল। এ দিনের বক্তব্যে তা নিয়ে ক্ষোভের ছায়া ধরা পড়েছে, মনে করছেন অনেকে।
এ দিন খানিকটা ক্ষোভের সুরে সুশান্তবাবু এও বলেন, “বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি তো প্রায় বিশ্বভারতীর মতো একই ধাঁচের। ওখানে গবেষণা, পঠন পাঠন কী রকমের হচ্ছে। আর এখানে? সেই মানের প্রকাশনা, গবেষণা কোথায়? রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন, গবেষণা না করতে?” এ দিনে বিশ্বভারতীর দক্ষিণায়ন রবিবিতানে বই প্রকাশের অনুষ্ঠান হয়। রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষণা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা, এ যাবৎ কাজকর্ম নিয়ে বলেন প্রোভোস্ট অধ্যাপিকা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকা বই, সিডি ওই গবেষণা কেন্দ্রে দেন প্রাক্তনীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy