দর্শক: সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অবতরণের মহড়া। বুধবার শান্তিনিকেতনে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
রাত পোহালেই বিশ্বভারতীর বার্ষিক সমাবর্তন ও বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন। তার আগে আরও আঁটোসাঁটো হল নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বুধবার থেকেই শান্তিনিকেতনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে এসপিজি (স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ)।
বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের খবর, আগামীকাল শুক্রবার হেলিপ্যাডে নামার পরে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল দশটা নাগাদ যাবেন উত্তরায়ণে। সেখান থেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসবেন। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলে শান্তিনিকেতন এসে পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনিও। আম্রকুঞ্জে অনুষ্ঠানের পরে দুই প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী চলে যাবেন বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনে।
সেখানে ১২টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর হাতে সময় খুব কম। তাই দু’টি অনুষ্ঠানের সবটাই দু’টোর মধ্যে শেষ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্যও কিছুটা সময় রাখতে হয়েছে। বৈঠকের একটা অংশে মুখ্যমন্ত্রীও যোগ দিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
শান্তিনিকেতন জুড়ে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। বুধবার দিনভর বিভিন্ন সময় হেলিকপ্টার ঘুরেছে শান্তিনিকেতনের আকাশে। সম্ভাব্য যে রাস্তা দিয়ে ভিভিআইপিরা যাবেন, সেই রাস্তার মধ্যে যে সমস্ত বাম্পার রয়েছে, সেগুলি তুলে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকেই। এ দিনও সমন্বয় বৈঠক হয়েছে বিশ্বভারতীতে। আম্রকুঞ্জ ও বাংলাদেশ ভবন ঘুরে দেখেছেন আধিকারিকরা। মঙ্গলবারই শান্তিনিকেতন এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বাংলাদেশ ভবন পরিদর্শন করেছেন। আশ্রম সংলগ্ন এলাকায় পর্যটক নিয়ন্ত্রিত হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই। আজ থেকে বেশ কিছু অংশে যান নিয়ন্ত্রণও হবে বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এত সাজো সাজো রব থাকলেও একটু হলেও দুঃখিত শান্তিনিকেতনের পড়ুয়ারা। এ বার দেওয়া হচ্ছে না ‘দেশিকোত্তম’ সহ অবন-গগন পুরস্কার। ছাত্রছাত্রীরাও ঐতিহ্যমণ্ডিত ‘ছাতিমপাতা’ আচার্য কিংবা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কারও হাত থেকেই পাচ্ছেন না। পাঁচ বছর সমাবর্তন না হওয়ায় এ বছর প্রায় দশ হাজার পড়ুয়ার সমাবর্তন পাওয়ার কথা। আচার্য একটি ‘প্রতীকি ছাতিমপাতা’ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের হাতে তুলে দিয়ে সমাবর্তনের সূচনা করে দেবেন। ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘আমাদের মা, বাবা কিংবা পরিবারের অনেকেরই দেখেছি সমাবর্তনে দেওয়া ছাতিমপাতা এখনও যত্ন করে কোনও বই-এর পাতার ভিতর রাখা আছে। আমাদের সেই স্মৃতি থাকবে না।’’ ফি বছর যাতে নিয়ম করে সমাবর্তন হয়, সেই দাবিও উঠতে শুরু করেছে।
অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর প্রতি সমাবর্তন প্রাপক এবং কর্মী, অধ্যাপকদের সকলকে নিজেদের একটি প্রবেশপত্র সহ অতিথিদের জন্য আরও দু’টি করে প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল। প্রবেশপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকেই। কিন্তু, সমাবর্তন এলাকা ঘুরে এসপিজির মনে হয়েছে যত সংখ্যক প্রবেশপত্র বিশ্বভারতী তৈরি করেছে, তত জন ভিতরে থাকতে পারবেন না। এসপিজির নির্দেশ মেনে সবাইকে নিজেদের প্রবেশপত্র দেওয়ার পরে অতিথিদের একটি করে কার্ড দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতী থেকে দেওয়া প্রবেশপত্র ছাড়াও অন্য একটি সচিত্র পরিচয়পত্র (যেমন— আধার, ভোটার কার্ড) সঙ্গে রাখার জন্য বলা হয়েছে। আম্রকুঞ্জে ঢোকার সময় ব্যাগ, ক্যামেরা, পেন, ছাতা, মোবাইল ফোন কিছুই নিয়ে ঢোকা যাবে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দশ বছরের কম বয়স হলে তাকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। জলের সমস্যা এড়াতে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে তিন হাজার জলের পাউচের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy