Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দিনভর স্লোগান, বিক্ষোভ, চুপ উপাচার্য
NRC

প্রতিবাদী ছাত্রদল

বুধবার রাতে হামলাকারীদের আক্রমণে জখম বিশ্বভারতীর ছাত্র স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল ভর্তি । সেই জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বহিরাগতদের আটকানোর জন্য বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। হাসপাতালের তিনটে গেটেই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

পড়ুয়াদের উপর হামলার প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ঐক্য বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

পড়ুয়াদের উপর হামলার প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ঐক্য বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

দয়াল সেনগুপ্ত ও বাসুদেব ঘোষ 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:০৯
Share: Save:

মাঝ রাত পেরিয়ে বৃহস্পতিবার গোটা দিন তেতে রইল বিশ্বভারতী চত্বর। প্রশ্ন উঠল, মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক উপস্থিত থাকার পরেও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল। অনেকে মুখর হলেন উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে। সব মিলিয়ে স্লোগান, পোস্টার, মিছিলে মুখরিত হল ক্যাম্পাস। আজ, শুক্রবারও উপাসনা গৃহের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।

বুধবার রাতে হামলাকারীদের আক্রমণে জখম বিশ্বভারতীর ছাত্র স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল ভর্তি । সেই জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বহিরাগতদের আটকানোর জন্য বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। হাসপাতালের তিনটে গেটেই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ছাড় ছিল কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকার্ড ধারী পড়ুয়াদের। তাতেও পড়ুয়াদের তরফে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধরের প্রতিবাদ আটকানো যায়নি।

সকাল ১০টা নাগাদ, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমায়েত হতে থাকেন ছাত্রছাত্রী ঐক্যমঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের হাতে নানা পোস্টার। তার কোনওটিতে লেখা, ‘সঙ্ঘি ভিসি গো ব্যাক’, কোনওটিতে লেখা ‘বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় কেন চুপ’, কোনওটিতে লেখা ‘ছাত্রীছাত্রীদের উপরে আক্রমণ চালানো ভিসির বাহিনীকে ধিক্কার জানাই’। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের গেটে অবস্থান বিক্ষোভও করতে থাকেন পড়ুয়ারা।

পড়ুয়াদের দাবি, ক্যাম্পাসে এনআরসি-র সমর্থনে হওয়া সভা এবং বিশ্বভারতীর কোর্ট সদস্য তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের এনআরসি নিয়ে বক্তৃতার বিরোধিতা করার আক্রোশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাভবন সিনিয়র বয়েজ় হস্টেলে ঢুকে বেধড়ক মারধর করে বহিরাগতেরা। শুধু ক্যাম্পাসে নয়, হামলাকারীরা হাসপাতালে ঢুকেও মারধর করে বলে অভিযোগ। বুধবার রাতের হামলায় উঠে এসেছে তিন জনের নাম। অচিন্ত্য বাগদি, সাবির আলি ও সুলভ কর্মকার। ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য মঞ্চের দাবি, অভিযুক্তরা ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। তাঁরা আগে তৃণমূল করত। কিন্তু, এখন এবিভিপিতে নাম লিখিয়েছে। যা হয়েছে উপাচার্যের প্ররোচনাতেই হয়েছে। ঘণ্টা দুই অবস্থান বিক্ষোভ চলার পরে ঐক্য মঞ্চের দুই প্রতিনিধি ঊষসী চট্টোপাধ্যায়, মৌমিতা চক্রবর্তীরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। এর মধ্যে বোলপুর কিসান মান্ডি থেকে গ্রেফতার করা হয় অচিন্ত্য বাগদি, সাবির আলিকে। পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন অচিন্ত্যরা।

বেলা প্রায় পৌনে একটা নাগাদ ঐক্য মঞ্চের দুই প্রতিনিধি উপাচার্যের পিএ-কে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘যে ভাবে ক্যাম্পাসে বহিরাগত বাহিনীকে ঢোকানো হয়েছিল তাতে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। দু’জন নয় সবাইকে।’’ তাঁরা আরও দাবি করেন, ‘‘ঘটনার সময় মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় নীরব সাক্ষীর ভূমিকা নিয়েছিলেন। এটা প্ররোচনা ছাড়া আর কী। ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকা অনুমোদনযোগ্য নয়। কিন্তু ,ক্যাম্পাসে যদি ছাত্রছাত্রী নিরাপদ না থাকেন, তা হলে পুলিশ তো ঢোকোতেই হবে।’’ এর পরে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা। তার পরে শান্তিনিকেতন থানায় গিয়ে সব দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAA NRC VIswa Bharati Shantiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE