Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতাল যেন দুর্গন্ধের আঁতুড়ঘর

নিকাশির বেহাল অবস্থা রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। রোগী থেকে হাসপাতালের কর্মী সকলেরই অভিযোগ, প্রথম থেকেই এখানে নিকাশি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, বর্ষাকালে তো বটেই এমনকি সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায়।

দুর্ভোগ: নর্দমার এই নোংরা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়। রামপুরহাট হাসপাতালে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দুর্ভোগ: নর্দমার এই নোংরা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়। রামপুরহাট হাসপাতালে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৫
Share: Save:

নিকাশির বেহাল অবস্থা রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। রোগী থেকে হাসপাতালের কর্মী সকলেরই অভিযোগ, প্রথম থেকেই এখানে নিকাশি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, বর্ষাকালে তো বটেই এমনকি সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটির ফলে নীচের জমা জলও ওপরে উঠে আসে। নিকাশির জল আটকে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। নোংরা জল পেরিয়েই হাসপাতালে আসতে হয় রোগী এবং তাঁর পরিজনদের।

জ্বরে আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসেছিলেন দেবগ্রামের রোকেয়া বিবি। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের জ্বর বেশি হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখানকার যা পরিস্থিতি তাতে মেয়ে সুস্থ হবে কি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। নোংরা জল ডিঙিয়ে ভেতরে আসতে হল।’’

হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে রামপুরহাট থানার মাসড়া গ্রামের রহিম শেখ নামে এক যুবকের দাবি, ‘‘ভিতরটা ঝাঁ চকচকে দেখলে হবে? বাইরে জমা জলে মল ভাসছে। হাসপাতালে রোগী পরিষেবা নিতে এসে আরও রোগে আক্রান্ত হবে। এত টাকা খরচ করে হাসপাতাল গড়া হল। জল নিকাশি নিয়েও একটু ভাবতে হতো। ’’

বাসিন্দাদের কথায়, ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতাল তৈরি হয়। তবুও এই হাল। নিকাশির বেহাল অবস্থা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ নিয়ে তারা প্রথম থেকেই সরব। হাসপাতাল সুপার শর্মিলা বৌলিক জানালেন, এখানে কাজে যোগদানের পরেই জল নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ আসে। জল নিকাশির ত্রুটি নিয়ে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকেও জানিয়েছেন তিনি। এবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখভাল করবেন।

হাসপাতালের এক কর্মী জানালেন বছর দেড়েক আগে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন হয়েছে তখন থেকেই তৎকালীন সুপার সুবোধ কুমার মণ্ডল জল নিকাশির ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ করে এসেছেন। কিন্তু সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্য দফতরের তৎকালীন মুখ্য সচিব অনিল ভার্মা-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের কাজ পরিদর্শনে এসেছিলেন। তাঁদের কাছেও সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে আবাসন দফতর কিছুটা তৎপরতা দেখালেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।

আবাসন দফতরের সহকারী বাস্তুকার সমীরণ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি। আগে পরিকল্পনা অনুযায়ী কি কাজ হয়েছে সেটা এখন অপ্রাসঙ্গিক। বর্তমানে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নোংরা আবর্জনা দূর করার জন্য রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ এবং রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জঞ্জাল এবং নোংরা আবর্জনা পরিস্কার করার কথা জানিয়েছে।’’

জল নিকাশি ব্যবস্থার কি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সে ব্যপারে জানা নেই বলে জানান তিনি। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিকাশি ব্যবস্থা প্রসঙ্গে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের সঙ্গে মন্ত্রী তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে কথা বলবেন। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rampurhat Super Speciality Hospital Rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE