Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঝালদা আবার নির্জলা, বিষ্ণুপুরে চলল বিক্ষোভ

দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জল ঠিক মতো না পেয়ে এ দিন কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিষ্ণুপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু মহিলা।

ঝিরঝির: বিষ্ণুপুরের সাত নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র।

ঝিরঝির: বিষ্ণুপুরের সাত নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর ও ঝালদা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০০:৫৪
Share: Save:

পানীয় জলের সঙ্কটে দুই শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বুধবার সকাল থেকে ফের নির্জলা রইল ঝালদা। তীব্র গরমে পানীয় জলের জন্য এ দিন সকাল থেকে পাড়ার কলের সামনে বালতি, হাঁড়ি, জ্যারিকেন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেন ঝালদার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষ। আর দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জল ঠিক মতো না পেয়ে এ দিন কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিষ্ণুপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু মহিলা।

গত রবিবার ঝালদায় পুরসভার জল মেলেনি। সোমবার সামান্য সময়ের জন্য জল মেলে। পুরসভা জানিয়েছিল, যে পাম্প হাউসের বৈদ্যুতিক লাইনে গণ্ডগোল হওয়ায় পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটেছে। মেরামত করে মঙ্গলবার সকালে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বুধবার বাসিন্দারা দেখেন ফের সেই সমস্যা। কার্যকরী পুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক বলেন, ‘‘ঝড়-বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক লাইনে গণ্ডগোল হওয়ার কারণেই সমস্যা হয়েছে। সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায় দেখা হচ্ছে।’’ পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাগদি পাড়ার বাসিন্দা চন্দন সিংহ জানান, মঙ্গলবার তাঁরা অল্প সময় জল পেয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে তাও বন্ধ। প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে সত্যভামা স্কুল থেকে জল বয়ে আনতে হয়েছে তাঁকে। বিভিন্ন খাবারের দোকানে বা হোটেলে কল থেকে জল সরবরাহ করে সংসার চলে জলধর পরামানিকের। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে কলে জল নেই। অপেক্ষাতেই দিন গেল।’’

বিষ্ণুপুরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৪০টি পরিবারের মহিলারা বুধবার সকালে স্থানীয় কাউন্সিলর সিদ্ধেশ্বর ধীবরের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখিয়ে জলের ব্যবস্থা করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভাকারীদের মধ্যে দীপ্তি নন্দী, ভক্তি খান, চায়না চক্রবর্তীদের অভিযোগ, গত এক মাস ধরে সরু ফিতের মতো জল পড়ছে। সারা দিনে এক বালতি জলও প্রতিটি পরিবার পাচ্ছে না। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে অনেকে কলে সেটুকু জলও মিলছে না। অথচ ওই এলাকায় জলের বিকল্প আর কোনও ব্যবস্থাও নেই।

ওই এলাকার বেশির ভাগ মানুষই তন্তুবায় সম্প্রদায়ের। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘জলের জোগাড় করতে এ পাড়া, ও পাড়া ঘুরব, না কি তাঁতের কাজ করবো! কাউন্সিলর এই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করেন, অথচ সমস্যা দেখেও দেখেন না। তাঁর কথাতেই পুরসভায় লিখিত অভিযোগ করেছি। তারপরেও সাত দিন পার, অবস্থার কোনও উন্নতি নেই। বাধ্য হয়েই কাউন্সিলরের বাড়িতে এসেছি। বিহিত না হলে পুরসভায় দল বেঁধে যাব।’’

স্থানীয় বাসিন্দা পবিত্র দে, বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্যাপগুলোয় অনেক দিন ধরেই জল আসছে না। তার মধ্যে টিউবওলের হাতল দুষ্কৃতীরা ভেঙে দিয়েছে। ন্যূনতম খাবার জলটুকু যদি পুরসভা দিতে না পারে, তবে কী কাজ করছে?’’

স্থানীয় কাউন্সিলর সিদ্ধেশ্বরবাবু আবার অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘পুরসভার জলকল দফতরের কর্মীরা আমার সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। পুরপ্রধানকেও অনেকবার জানিয়েছি। আমি আর কী করব?’’ বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন জলের পাইপ বসানোরর পরীক্ষায় কিছু ত্রুটি ছিল। তবে জলকল দফতরকে খবর দেওয়ায় ওরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করে দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE