Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
পুলিশি অভিযানে মিলল না কিছু

রাতারাতি উঠে গেল লেদ কারখানা

রঘুনাথপুরের অস্ত্র কারখানা চালানোর মূল পান্ডা ইসরার আহমেদকে জেরা করে পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকায় একটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছিল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে মফস্সল থানার গোলবেড়া গ্রামের ওই বাড়িটিতে অভিযান চালিয়েও পুলিশ কিছু পায়নি। কিন্তু, রঘুনাথপুরে অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস মেলার পরে পরেই গোলবেড়ার ওই বাড়িটিতে ভাড়া থাকা জনা ছয়েক ব্যক্তি রাতারাতি কেন পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেল, সেটা ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

রঘুনাথপুরের অস্ত্র কারখানা চালানোর মূল পান্ডা ইসরার আহমেদকে জেরা করে পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকায় একটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছিল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে মফস্সল থানার গোলবেড়া গ্রামের ওই বাড়িটিতে অভিযান চালিয়েও পুলিশ কিছু পায়নি। কিন্তু, রঘুনাথপুরে অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস মেলার পরে পরেই গোলবেড়ার ওই বাড়িটিতে ভাড়া থাকা জনা ছয়েক ব্যক্তি রাতারাতি কেন পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেল, সেটা ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

গত শুক্রবার রঘুনাথপুর থানার ব্লকডাঙ্গা এলাকায় একটি ওয়েল্ডিং কারখানায় অভিযান চালিয়েছিলেন জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। সেই অভিযানে ওই কারখানাটি থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর পরিমানে দেশি নাইন এমএম পিস্তল তৈরির খোল-সহ পিস্তলের যন্ত্রাংশ। কারখানা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ছ’জনকে। ধৃতেরা সকলেই বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার বাসিন্দা। পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ওই অস্ত্র তৈরির চক্রের মূল পান্ডা, ঝাড়খণ্ডে ঝরিয়ার বাসিন্দা ইসরার আহমেদ। বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুরের অস্ত্র কারখানা সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে রঘুনাথপুর থানায় এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। ছিলেন ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বিশাল গর্গ ও পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। থানায় তিন পুলিশ কর্তা নিজেদের মধ্যে আধঘণ্টা বৈঠক করেন। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দুষ্কৃৃতীদলের মূল পান্ডা ইসরার আহমেদকে। পরে আইজি বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত ইসরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই সম্প্রতি গোলবেড়া গ্রামের ওই বাড়িটির সন্ধান পায় পুলিশ। পুরুলিয়া-বোকারো ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে চাষমোড়ের অদূরে ওই গ্রামের বাড়িটিতে অভিযানও চালায় পুলিশ। তবে কিছুই মেলেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িটির মালিক পাশের একটি গ্রামের এক মুরগি ব্যবসায়ী। পাঁচ-ছয় মাস আগে তিনি বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের বোকারোর মকদমপুর গ্রামের সেলিম শেখকে। বাড়ি ভাড়া নিয়ে এখানে গাড়ির বল বেয়ারিংয়ে ব্যবসা করবে, সেলিম এমনটাই জানিয়েছিল বলে দাবি করেছেন বাড়িটির মালিক। তিনি এ দিন বলেন, “মাসে সাত হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি করেছিল সেলিম। সেখানে পাঁচ-ছ’জন থাকত। বাড়িটিতে জলের ব্যবস্থা না থাকায় ওরাই লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বাড়ির মধ্যে জলের ব্যবস্থা ও শৌচালয় বানিয়ে নিয়েছিল। চুক্তিতে স্থির হয়েছিল ওই টাকা ভাড়া থেকে কেটে নেওয়া হবে। পাঁচ মাসের ভাড়াও দিয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন আগে হঠাৎই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় ওরা।”

আচমকা বাড়ি বন্ধ করে ভাড়াটেদের চলে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে ভাবাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়িটিতে যারা থাকত তারা, কেউই বিশেষ মিশত ন। বাড়ি মালিকের দাবি, ভাড়া দেওয়ার পরে তিনি আর বিশেষ সেখান যাননি। তিনি বলেন, “সম্প্রতি পুলিশ এসে জিজ্ঞাসা করেছিল ওই বাড়িটিতে বন্দুক তৈরি হয় কিনা।”

পুলিশ মনে করছে, ধীরে ধীরে গোলবেড়া গ্রামের বাড়িটিতেও কারখানা করার পরিকল্পনা ছিল ভাড়াটেদের। কারণ ওই বাড়িটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি স্থানীয় গাড়াফুসড়ো পঞ্চায়েতের প্রধানের কাছে আরও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথির ব্যবস্থা করতে গিয়েছিল এক ব্যক্তি। পুলিশ সুপার এ দিন বলেন, “এই বাড়িটি বোকারোর এক ব্যক্তি কেন ভাড়া নিয়েছিল, সেখানে কারা থাকত, সে-সব বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE