ছন্দে: কাজ চলছে নলহাটির পাথর শিল্পাঞ্চলে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের পঞ্চাশ দিন পেরিয়েছে। নলহাটি ও মুরারইয়ের পাথর শিল্পাঞ্চল পুরোপুরি বন্ধ ছিল এত দিন। ওই শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা রুজি হারিয়ে চরম সমস্যায়। অবশেষে প্রশাসনের অনুমতিতে শর্তসাপেক্ষে খুলল পাথর ক্রাশার (পাথর ভাঙার কল)। খুশির হওয়া পাথর শিল্পাঞ্চলে। যদিও পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। প্রথম ধাপে নলহাটিতে পাঁচটি এবং মুরারইয়ের রাজগ্রামে ছ’টি ক্রাশার খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাথর শিল্পাঞ্চলে দীর্ঘদিন বাদে আবার শোনা গেল পাথর ভাঙার আওয়াজ। শ্রমিকদের হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভাঙার সেই চেনা ছবিও চোখে পড়ল। মাস্ক পরা মুখেও শ্রমিকদের সেই চেনা হাসি। রাজগ্রামের তেমনই এক শ্রমিক বললেন, ‘‘পাথর ভেঙে ও ক্রাশারে কাজ করে আমাদের সংসার চলে। লকডাউনের ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে গিয়েছিলাম। ওষুধ কিনতে পারছিলাম না। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খাতা, পেন কেনার টাকাও ছিল না। ক্রাশার খোলায় আমরা আবার কাজ শুরু করেছি। পারিশ্রমিকও পেয়েছি।’’ নলহাটি গোপালপুরের পাথর শ্রমিক জিতেন টুডু এক গাল হেসে বললেন, ‘‘বাড়িতে এক টাকাও ছিল না। আজ কাজ করে পারিশ্রমিকের টাকায় ডিম কিনে নিয়ে যাব। পরিবারের সকলে এক মাস ধরে অল্প করে খাচ্ছে। সরকার ও মালিকেরা ক্রাশার খোলায় আমরা আবার পেট ভরে খাবার খেতে পাব।’’
পাথর শিল্পাঞ্চলে কাজ শুরু হওয়ায় শ্রমিকদের পাশাপাশি স্বস্তিতে রয়েছে পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ট্রাক্টর ও ট্রাকের মালিক, চালক, খালাসিরাও। এত দিন তাঁরাও কর্মহীন হয়েছিলেন। তাঁরাও আশার আলো দেখছেন। রাজগ্রামের ক্রাশার মালিক পাপ্পা খান বলেন, ‘‘প্রশাসনের থেকে অনুমতি নিয়ে ক্রাশার খুলেছি। লকডাউনের আগে অনেক পাথর মজুত করে রেখেছিলাম। সেগুলি ভেঙে আস্তে আস্তে জেলার বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করব।’’
বিডিও (নলহাটি ১) জগদীশচন্দ্র বাড়ুই বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে ক্রাশারগুলিকে শর্তসাপেক্ষে খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে, ক্রাশারে শ্রমিকদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সকলের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। হাত ধোয়ার জন্য স্যানিটাইজ়ার দিতে হবে মালিকপক্ষকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy