আইন-ভেঙে: বিষ্ণুপুর ব্লকের দেউলি গ্রামে, সারদা সেতুর কাছে। —নিজস্ব িচত্র।
অবৈধ বালি খাদান নিয়ে ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, বুধবার তাঁর বাঁকুড়ায় আসার কথা। কী পরিস্থিতি জেলার?
মাসখানেক আগে বিষ্ণুপুর ব্লকের ধারাপাট গ্রামের কাছে, সারদা সেতুর পশ্চিম দিকে দিনে দুপুরে দ্বারকেশ্বরে যন্ত্র নামিয়ে বালি তোলার অভিযোগ উঠেছিল। মঙ্গলবার দেখা গেল, সেতুর পূর্ব দিক থেকে, দেউলি গ্রামের কাছে বালি তোলা চলছে। দেউলি গ্রামের কাছে, যন্ত্র নামিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দিনভর বিষ্ণুপুর ব্লকের দ্বারিকা গোঁসাইপুর পঞ্চায়েতের দেউলি, সুভাষপল্লি, ডিহর গ্রামের কাছে নদে দাপিয়েছে যন্ত্র। বিষ্ণুপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা যায়, ব্লকে দু’টি বালি খাদান অনুমতি নিয়ে চলে। বালি ইজারাদারকে নদ থেকে বালি তোলার জায়গাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ফাল্গুনী শতপথী বলেন, ‘‘ছ’টি ব্লক মিলিয়ে দামোদর ও দ্বারকেশ্বর নদ থেকে অনুমতি নিয়ে ৬৮ টি বৈধ বালি খাদান চলছে মহকুমায়। কোথাও অবৈধ বালি খাদান নেই।’’
মানছেন না সুভাষপল্লির দ্বারকেশ্বর নদের ধারের কয়েক জন বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, অন্য মৌজার চালান নিয়ে ডিহর, বসন্তপুর থেকে বালি উঠছে দিনে দুপুরে, যন্ত্র দিয়ে। বালি মাফিয়াদের উৎপাতে বিষ্ণুপুর ব্লকের দেউলি, সুভাষপল্লি, মধুবন, আঁইচবাড়ি, দমদমার মতো নদীর তীরের এলাকাগুলির চাষিরা অতিষ্ঠ। তাঁদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, নদীর ভাঙনে জমি হারিয়ে এখন দিনমজুরি করতে হচ্ছে। জনতা আর ডিহর গ্রামের কিছু বাসিন্দা বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর শহরে যাওয়ার জন্য যে অস্থায়ী সেতুটা রয়েছে, তার পাশ থেকে দিনে দুপুরে বালি তোলা হয়। প্রশাসনকে খবর দিলে মাফিয়া আগে থেকে টের পেয়ে যায়। পুলিশ আসার আগেই যন্ত্র নিয়ে সরে পড়ে।’’
সর্ষের মধ্যে যে ভূত আছে তা মানছেন বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকও। তিনি জানাচ্ছেন, অভাব রয়েছে পরিকাঠামোরও। ছ’টি ব্লকে একটি মাত্র স্থায়ী গাড়ি। অভিযানে সেটাই সম্বল। অস্থায়ী ভাবে বছরে দু’বার তিন মাসের জন্য গাড়ি ভাড়া করে সামাল দেওয়া হয়। তবে খবর পেলেই অভিযানে যাওয়া হয় বলে দাবি করেছেন তিনি। জানান, বালি খাদানে সিসি ক্যামেরা বসানো না হলেও বিষ্ণুপুর মহকুমার ইন্দাস ও কোতুলপুর ব্লকে দু’টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে কাজ চলছে। অতিরিক্ত বালি নিয়ে যাওয়া ট্রাক বাজেয়াপ্ত করা হলে তা রাখার সমস্যাও রয়েছে বলে দাবি করেন বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ফাল্গুনী শতপথী।
দ্বারকেশ্বর নদের তীরের বনমালীপুর, অযোধ্যা, দ্বারিকা, দেউলি, ভাটরা, সুভাষপল্লি, মধুবন, চাকদহের বাসিন্দাদের একাংশ বলেন, ‘‘প্রশাসন ইজারাদারদের থেকে রাজস্ব পেয়েই হাত ধুয়ে নেয়। ফলে বেআইনি ভাবে বালি তুললেও জরিমানা দিয়ে মিটে যায়। কিন্তু আমরা জমি, বাড়ি খোয়াই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy