Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Crime

মল্লারপুরে স্ত্রী-মেয়ে খুন, স্বামী পলাতক

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডলিদেবী রামপুরহাট মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দফতরে চাকরি করতেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মল্লারপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০৫:১০
Share: Save:

ঘর থেকে উদ্ধার হল মা ও মেয়ের মৃতদেহ। মল্লারপুর হাইস্কুল সংলগ্ন পাড়া থেকে রবিবার দুপুরে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায় মৃতদের নাম ডলি চৌধুরী মণ্ডল (৪৮) এবং মিত্রা ওরফে রিমা মণ্ডল (১৭)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ডলি দেবী ও তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। যদিও খুনের কারণ বা কবে, কেমন করে খুন করা হয়েছে পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। তদন্তকারীরা জানান, এই ঘটনার পর থেকেই ডলিদেবীর স্বামী মিলন মণ্ডল পলাতক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডলিদেবী রামপুরহাট মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দফতরে চাকরি করতেন। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের অন্নপ্রাশনের পরেই আকস্মিক মৃত্যু হয়। ছোট মেয়ে মিত্রা স্থানীয় মল্লারপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রামপুরহাটের খাদ্য নিয়ামক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ডলিদেবী নিরীহ স্বভাবের মহিলা ছিলেন। দিন পনেরো ধরে আর অফিসে যাচ্ছিলেন না।

ডলিদেবীর এক বোন ভগবতী মণ্ডল মল্লারপুর থানার গোয়ালা গ্রামে থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘রবিবার দুপুরে দিদির বাড়িতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিতে আসেন জামাইবাবুর ভাগ্নে এবং আরও দুজন। সাড়াশব্দ না পেয়ে ওঁরা দরজায় ধাক্কা মারতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। এরপরে পুলিশ গিয়ে বাড়ির দোতলার শোওয়ার ঘরে দিদির মৃতদেহ লেপ চাপা দেওয়া অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে।’’ এলাকার এক বাসিন্দা জানান, ডলিদেবীর দেহের পুরোটাই লেপ দিয়ে ঢাকা ছিল। মাথার চুলের কিছুটা বেরিয়ে ছিল। মাথার পাশে চাদরের মধ্যে রক্তের দাগও পাওয়া গিয়েছে। মৃতদেহটি পচতে শুরু করেছিল। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরের মেঝেতে পড়েছিল মিত্রার মৃতদেহ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিলনবাবুদের নিজেদের বাড়ি মল্লারপুর থানার মদিয়ান গ্রামে। বছর পাঁচেক আগে মল্লারপুর হাইস্কুল পাড়ায় দোতলা পাকা বাড়িটি বানিয়ে সেখানে সপরিবারে উঠে আসেন। চাকরি না পাওয়ায় আগে টিউশনি পড়াতেন তিনি। ইদানিং কোনও কাজ করতেন না। ডলিদেবীর রোজগারেই সংসার চলতো। আর সময় কাটাতে বাড়িতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার চর্চা করতেন মিলনবাবু। ভগবতীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘দিন পনেরো আগে দিদি স্কুটি চালানো শিখতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। তখন একবার দেখা করতে এসেছিলাম। দশ দিন আগে ফোনে কথা হয়েছিল। দিদি ফোনে কারও সঙ্গে বেশিক্ষণ কথা বললে জামাইবাবু বিরক্ত হতেন। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশাও পছন্দ করতেন না। কোনও কথাকাটাকাটি হয়েছিল কিনা জানি না।’’

তদন্তকারীরা জানান, মিলনবাবুর সঙ্গে গায়েব হয়েছে তাঁর স্কুটিটিও। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিকল্পনামাফিক শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে। কেন খুন করা হয়েছে সেটা তদন্ত করা হচ্ছে।’’ সোমবার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের দল নমুনা সংগ্রহ করতে আসবেন বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE