Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিতর্কের মুখে বাতিল কর্মশালা

এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষিত কর্মশালাটি করার জন্য অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মশালার অনুমতি দিচ্ছে না তা বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মশালাটি নিয়ে আগেও কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’ 

বার্তা: কর্মশালার বিরুদ্ধে পোস্টার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

বার্তা: কর্মশালার বিরুদ্ধে পোস্টার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৬
Share: Save:

রাজনৈতিক দলের প্রছন্ন প্রভাবের অভিযোগ ওঠায় বাতিল করে দেওয়া হল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগ ও রাষ্ট্রীয় কলামঞ্চের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আর্ট কালচার কমিউনিকেশন কর্মশালাটি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আগামী ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্বভারতীর লিপিকা পেক্ষাগৃহে এই কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একাধিক ছাত্র সংগঠন রাষ্ট্রীয় কলা মঞ্চের সঙ্গে এবিভিপির সরাসরি যোগ রয়েছে এই অভিযোগ তুলেছিল। বিশ্বভারতীতে গৈরিকীকরণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সোচ্চার হয়েছিল বাম ও ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার এসএফআই-এর পক্ষ থেকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এই ধরনের কর্মশালায় সরাসরি রাজনৈতিক দলের যুক্ত থাকার ঘটনা বিশ্বভারতীর নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন করবে বলে পোস্টারও পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। কর্মশালায় যোগদানকারী ছাত্র-ছাত্রীদের এই কর্মশালা বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল পোস্টারে।

এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষিত কর্মশালাটি করার জন্য অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মশালার অনুমতি দিচ্ছে না তা বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মশালাটি নিয়ে আগেও কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’

যদিও এ দিন সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রীয় কলামঞ্চ তাঁদেরই সাংস্কৃতিক বিভাগ – একথা জানিয়ে এবিভিপি’র বীরভূম জেলা সহ সভাপতি সমরেশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ঘোষিত অনুষ্ঠান এভাবে বাতিলের পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। লিখিত কোনও তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। তবে এমনটা হলে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি।’’

কর্মশালা নিয়ে পাল্টা ধিক্কার জানিয়েছে এসএফআই। এবিভিপি নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করতে বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজে লাগাচ্ছে এবং তাতে কর্তৃপক্ষের সমর্থন আছে বলেও অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তার উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএফআই-এর সদস্যরা। দাবি জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই অনুষ্ঠান বাতিল করার পাশপাশি ভবিষ্যতে কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও রকম কর্মসূচি বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা চলবে না। এসএফআই-এর বিশ্বভারতী লোকাল কমিটির সদস্য জয়দীপ সাহার বক্তব্য, ‘‘এইভাবে একটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের আয়োজনে কর্মশালা হলে তা বিশ্বভারতীর নিরপেক্ষতা ও ঐতিহ্য ক্ষুন্ন করবে বলেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কর্মশালা বাতিল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা।’’ এই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্থানীয় নেতা সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী এই কর্মশালার অনুমতি না দেওয়ায় আমাদের একটি নৈতিক জয় হয়েছে।’’

শনিবার বিকেলে বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গৌর প্রাঙ্গনে এই বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কোনও রাজনাতিক দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবে কোনও অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও করা যাবে না তা তাঁরা উপাচার্যকে রবিবার জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Santiniketan Workshop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE