Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ খাদানে ‘ঝাঁপ’ যুবতীর, থমকে উদ্ধার-কাজ

উদ্ধারে প্রথমে রঘুনাথপুর থেকে নিয়ে আসা হয় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। কিন্তু খনির গভীরতা দেখার পরে তাঁরা নিজেদের অক্ষমতার কথা জানান। 

তন্নতন্ন: রানিপুর কয়লাখনি থেকে উদ্ধারের চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

তন্নতন্ন: রানিপুর কয়লাখনি থেকে উদ্ধারের চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪১
Share: Save:

বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়লা খনির ডুলি খাদানে ঝাঁপ দিয়েছেন এক যুবতী। শুক্রবার সকালে এমনই খবরে তোলপাড় পড়ে গেল পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার রানিপুর এলাকা। সন্ধ্যা পর্যন্ত রঘুনাথপুরের সিভিল ডিফেন্স-এর কর্মীরা এবং দুর্গাপুরের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাত নম্বর ব্যাটেলিয়ন চেষ্টা করেও যুবতীর খোঁজ পায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিপুরের বছর বাইশের ওই যুবতীর নাম সুস্মিতা গোপ। এ দিন সকালে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। এলাকার বাসিন্দা পরশুরাম রামের দাবি, তাঁর সঙ্গে রাস্তায় সুস্মিতার দেখা হয়। তাঁকে ওই যুবতী জানিয়েছিলেন, তাঁর শরীর ভাল নেই। বাড়িতে সে কথা জানাতে বলেন। পরশুরামের দাবি, ‘‘ওই কথা বলার পরেই দৌড়তে থাকে মেয়েটা। আমি পিছু নিই। কিন্তু হঠাৎ দেখি, মেয়েটা খাদানের মধ্যে ঝাঁপ দিল।’’ সঙ্গে সঙ্গেই মেয়েটির পরিবারকে খবর দেন পরশুরামবাবু।

তবে কেন হঠাৎ এমন কাণ্ড ঘটালেন তিনি? তা স্পষ্ট নয় পরিবার পরিজনদের কাছেও। পুলিশ জানাচ্ছে, আগামী মার্চ মাসে ওই যুবতীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সুস্মিতার মা মিতালি গোপ বলেন, ‘‘সকালে উঠে মেয়ে বাড়ির কাজকর্ম সেরে বেরিয়েছিল। কোথায় যাচ্ছে কিছুই জানিয়ে যায়নি। বিয়ে নিয়ে আপত্তি ছিল বলেও কিছু জানায়নি। কেন এমন হল, বুঝতে পারছি না।’’

উদ্ধারে প্রথমে রঘুনাথপুর থেকে নিয়ে আসা হয় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। কিন্তু খনির গভীরতা দেখার পরে তাঁরা নিজেদের অক্ষমতার কথা জানান।

পরে দুর্গাপুর থেকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আসে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যার পরে তারাও জানিয়ে দিয়েছে, খনির ভিতর থেকে ওই যুবতীকে উদ্ধার করা তাঁদের পক্ষেও সম্ভব নয়।

পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইসিএল-এর কাছ থেকে জানা গিয়েছে ১৯৮৪ সালে বন্ধ হয়ে যায় রানিপুরের ওই কয়লাখনি। ওই খাদানের গভীরতা প্রায় সাতশো ফুট। তার মধ্যে উপর থেকে ৩০-৩৫ ফুট নামার পরেই জল। তাই খনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে সাবধানতা অবলম্বন করে প্রায় দশ ফুট ব্যাসের ওই খাদানের মুখের চার পাশে কয়েক ফুট উঁচু দেওয়াল তুলে দেয় ইসিএল। কোনও ভাবে ওই দেওয়াল টপকে যুবতী ঝাঁপ দিয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, উদ্ধারের কাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আনার জন্য জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। এসডিও (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘ওই মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য প্রথমে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেই উদ্ধারের জন্য আসতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা জানিয়েছিল, নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারে অসমর্থ হলে তবেই তারা আসবে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাদের অক্ষমতার কথা জানিয়েছে। এখন এনডিআরএফ-এর আসার আশায় সবাই রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide coal mine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE