Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাজির খরচেই কম্বল 

পাকাপাকি শীত আসেনি। কিন্তু, রাতের হিমে আস্তে আস্তে ঠান্ডা জাঁকিয়ে পড়তে শুরু করেছে। তাই নিজেদের হাত খরচ বাঁচিয়ে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় টাকা তুলে দুঃস্থ মানুষদের উষ্ণতা পৌঁছে দিতে বেরিয়ে পড়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায়, কিঙ্কর বিশ্বাস, রণিত মণ্ডল, শুভজিৎ লাহা-সহ আইটিআই-এর ছাত্র অঙ্কুশ চৌধুরী, সৌরভ চৌধুরীরা। 

ওম: রাতে পথে পথে ঘুরলেন রঘুনাথপুরের কিছু তরুণ। নিজস্ব চিত্র

ওম: রাতে পথে পথে ঘুরলেন রঘুনাথপুরের কিছু তরুণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪১
Share: Save:

দেওয়ালির রাতটা একটু অন্য ভাবে কাটাতে চেয়েছিলেন ওঁরা। তাই, বুধবার রাতে বাজি না ফাটিয়ে দলবেঁধে বেরিয়ে পড়েছিলেন। সঙ্গে নিয়েছিলেন প্রায় একশো নতুন কেনা কম্বল। রাতভর ছররা, আদ্রা, জয়চণ্ডী, মৌতোড়, আনাড়ার মতো বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্টেশনে, রাস্তার ধারে শুয়ে থাকা দুঃস্থ লোকেদের হাতে কম্বল তুলে দিলেন আনাড়ার বাসিন্দা ছাত্রেরা।

পাকাপাকি শীত আসেনি। কিন্তু, রাতের হিমে আস্তে আস্তে ঠান্ডা জাঁকিয়ে পড়তে শুরু করেছে। তাই নিজেদের হাত খরচ বাঁচিয়ে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় টাকা তুলে দুঃস্থ মানুষদের উষ্ণতা পৌঁছে দিতে বেরিয়ে পড়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায়, কিঙ্কর বিশ্বাস, রণিত মণ্ডল, শুভজিৎ লাহা-সহ আইটিআই-এর ছাত্র অঙ্কুশ চৌধুরী, সৌরভ চৌধুরীরা।

মাস ছয়েক আগে আনাড়া-সহ জেলার অন্য এলাকার কিছু ছাত্রছাত্রী নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে তৈরি করেছেন একটি সংস্থা। বিভিন্ন সামাজিক কাজ করা-সহ দুঃস্থ, অসহায় লোকজনের পাশে দাঁড়ানোই তাঁদের উদ্দেশ্য। তাঁরা জানান, নিজেদের হাতখরচ থেকে দৈনিক এক টাকা বাঁচিয়ে চাঁদা দিয়ে সংস্থার তহবিল তৈরি করেছেন। বর্তমানে তাঁদের সদস্য সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে।

দৈনিক এক টাকা করে দিয়ে তৈরি হওয়া তহবিল থেকে প্রথমেই আনাড়ার এক প্রতিবন্ধী বাসিন্দাকে ট্রাই সাইকেল কিনে দেন ওই কলেজ পড়ুয়ারা। পরে আরও বড় কাজ। ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত রঘুনাথপুর কলেজের ছাত্রী পুজা গড়াইয়ের চিকিৎসা করাতে এই সংস্থার সদস্যরা রাস্তায় নেমেছিলেন।

তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই এগিয়ে আসেন। তাতে পূজার চিকিৎসার খরচের অনেকখানি জোগাড় হয়।

ইতিমধ্যে ফেসবুকে নিজেদের একটা পেজ তৈরি করেছে ওই সংস্থা। কিছুদিন আগে সেই পেজের মাধ্যমে তাঁরা কম্বল কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন জানান। অর্ণবরা জানান, আশাতীত সাড়া মিলেছিল। বহু মানুষ সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্য পাঠান। নিজেরাও পুজোর খরচ বাঁচিয়ে টাকা দেন।

বুধবার রাতে রাস্তার পাশে, স্টেশন চত্বরে রাত কাটানো ছেঁড়া চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা মানুষদের হাতে কম্বল তুলে দেন। আদ্রা ও জয়চণ্ডী স্টেশনে তাঁদের পাশে দাঁড়ান আরপিএফ ও রেলকর্মীরা। ছাত্রেরা বলেন, ‘‘থামব না। গুটি গুটি পায়ে আমরা মানুষজনের পাশে দাঁড়াব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blanket Crackers IIT students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE