Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পুরুলিয়ায় পরীক্ষার্থী সংখ্যায় টেক্কা ছাত্রীদের

মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমল পুরুলিয়া জেলায়। তবে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা এই জেলায় এ বার মাধ্যমিকে বেড়েছে। আগামী সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তার আগে পুরুলিয়া জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার জেলায় ৪১,৫৭৫ জন মাধ্যমিকে বসতে চলেছে। গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ৪১,৮৮৮ জন।

সোমবার থেকে শুরু মাধ্যমিক। রাইপুরের মটগোদা স্কুলে চলছে পরীক্ষা-প্রস্তুতি।

সোমবার থেকে শুরু মাধ্যমিক। রাইপুরের মটগোদা স্কুলে চলছে পরীক্ষা-প্রস্তুতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২০
Share: Save:

মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমল পুরুলিয়া জেলায়। তবে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা এই জেলায় এ বার মাধ্যমিকে বেড়েছে। আগামী সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

তার আগে পুরুলিয়া জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার জেলায় ৪১,৫৭৫ জন মাধ্যমিকে বসতে চলেছে। গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ৪১,৮৮৮ জন।

তবে এ বার ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে পুরুলিয়ায়। গত বছর যেখানে ২০,০৮৮ জন ছাত্রী মাধ্যমিকে বসেছিল, এ বার ছাত্রীর সংখ্যা ২১,৩৪৮। অর্থাত্‌ ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১,২৬০ জন। এ বার মাধ্যমিকে যে ৪১,৫৭৫ জন পরীক্ষায় বসছে, তাদের মধ্যেও ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার ২০,২২৭ জন ছাত্র ও ২১,৩৪৮ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। অর্থাত্‌ চলতি বছরে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা ১,১২১ জন বেশি।

এ বার পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ওই পরীক্ষার্থী যাতে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে গিয়ে নিবির্ঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য বিশেষ কেবিন প্রস্তত রাখতে বলা হয়েছে। সমিতির আহ্বায়ক কামাক্ষ্যাপ্রসাদ ত্রিপাঠী বলেন, “পরীক্ষা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ায় বা নানা কারনে কোনও কোনও ছাত্রছাত্রীর পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।” তিনি জানান, এর পাশাপাশি এ বার পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ভিডিও রেকর্ডিং করা হবে। বিশেষত স্পর্শকাতর যে সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে সেই কেন্দ্রগুলি তো বটেই, তার পাশাপাশি অন্য কেন্দ্রেও এই রেকর্ডিং করা হবে। ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কাজটি পুলিশ করবে। বিডিওদের এই বিষয়টি দেখভাল করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অবাঞ্ছিত লোকজনের ভিড় থাকলে সেখানে কারা রয়েছেন এবং তাঁদের কাজকর্ম ভিডিও ক্যামেরায় ধরে রাখা হবে। বেলা পৌনে ১২টার আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে। এ ছাড়া অন্যবার যে সমস্ত বিধি বলবত্‌ থাকে তা এবারও তা থাকছে। সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝালদার জারগো, বান্দোয়ানের ছিরুডি, মানবাজার ২ ব্লকের বোরো, বরাবাজারের বাঁশবেড়িয়া, বাঘমুণ্ডির সুইসা, আড়শার কাঁটাডি, কোটশিলার (ঝালদা ২ ব্লক) জিউদারু ও মানবাজার ১ ব্লকের বিসরি পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ বার মাধ্যমিকে

• মাধ্যমিকে এ বার বসছে ৪১, ৫৭৫ জন। গতবার ছিল ৪১,৮৮৮ জন। অর্থাত্‌ পরীক্ষার্থী কমেছে ৩১৩।

• বেড়েছে ছাত্রীর সংখ্যা। গত বছর ২০,০৮৮ জন ছাত্রী পরীক্ষা দেয়, এ বার ছাত্রীর সংখ্যা ২১,৩৪৮।

• ছাত্রদের তুলনাতেও ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। ছাত্রের সংখ্যা ২০,২২৭ জন। তাদের তুলনায় ১,১২১ জন ছাত্রী বেশি।

• মোট পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০টি। যার মধ্যে ৬১টি মূল কেন্দ্র, উপকেন্দ্র ৩৯টি।

• অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা নিতে পৃথক কেবিন রাখা হচ্ছে।

• পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ভিডিও রেকর্ডিং করা হবে।

পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য এ বারও বিশেষ কয়েকটি রুটে স্পেশ্যাল বাসের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, তিনটি রুটে এই বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরুলিয়া থেকে সকালে বাস যাবে চাকলতোড়, টকরিয়া, বদলডি, বিজয়ডি, বামনি হয়ে মানবাজার। এ ছাড়া পুরুলিয়া থেকে সকালে রওনা দিয়ে টামনা, কাঁটাডি, বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি, তুন্তুড়ি হয়ে সুইসা বাস যাবে। পুরুলিয়া থেকে অন্য বাস জয়পুর, পুন্দাগ হয়ে সিধি পর্যন্ত যাবে। পুরুলিয়া থেকে মানবাজারগামী বাসগুলিও পরীক্ষার সময় রাজনওয়াগড় ছুঁয়ে যাবে। পরীক্ষার সময় আচমকা কোনও বাস যাতে রুট থেকে উঠে না যায় বা বন্ধ না করে দেওয়া হয় তা দেখতে বাস মালিক সংগঠনকেও জানানো হয়েছে।

এ বার জেলায় মোট পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০টি। যার মধ্যে ৬১টি মূল কেন্দ্র রয়েছে, আর উপকেন্দ্র রয়েছে ৩৯টি। জেলার বিধায়ক তথা রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্প দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বার মাধ্যমিকে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি চলতি বছরে ছাত্রদের তুলনাতেও ছাত্রী বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্প বা জঙ্গলমহলের ছাত্রীদের স্কুলে আসার জন্য সাইকেল দেওয়া সব মিলিয়ে পুরো উদ্যোগ ছাত্রীদের মধ্যে উত্‌সাহ জুগিয়েছে। একদা নারী শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা পুরুলিয়ায় এই যে মাধ্যমিকে ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এটা অবশ্যই সদর্থক দিক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

madhyamik purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE