Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বাঁকুড়ায় মমতার বৈঠক

প্রকল্পের কাজে গতি বাড়ানোর নির্দেশ

জেলায় সরকারি নানা প্রকল্পের কাজের গতি বাড়নোর নির্দেশ দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলীয় সংগঠন বাড়াতে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ-র সঙ্গে নতুন করে বাড়তি দায়িত্ব দিলেন অরূপ চক্রবর্তী, শুভাশিস বটব্যাল, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো দলীয় নেতাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৮
Share: Save:

জেলায় সরকারি নানা প্রকল্পের কাজের গতি বাড়নোর নির্দেশ দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলীয় সংগঠন বাড়াতে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ-র সঙ্গে নতুন করে বাড়তি দায়িত্ব দিলেন অরূপ চক্রবর্তী, শুভাশিস বটব্যাল, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো দলীয় নেতাদের।

পুরুলিয়ার হুড়ায় প্রশাসনিক জনসভার পরে সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী ছাতনার শুশুনিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানে বিভিন্ন দফতরের কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। বৈঠকে পাট্টাবিলি, কিষান ক্রেডিট কার্ড বিলি, স্কুলে শৌচালয় গড়ার বিষয়ে বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলেন তিনি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলার প্রায় ৩৫টি স্কুলে এখনও শৌচালয় নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জায়গার সমস্যার জন্যই শৌচালয় গড়া যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, সমস্যা যাই থাক না কেন, তা কাটিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে। সোনামুখীতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকান দ্রুত গড়ার বিষয়েও জোর দিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে সাংসদ তহবিল থেকে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ তহবিল থেকে টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। ন্যায্যমুল্যের ওষুধের দোকান করার জায়গা জেলা পরিষদের তরফে ঠিক করে দেওয়া হবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, মুকুটমণিপুর, শুশুনিয়ায় পর্যটনের বিকাশ এবং মেজিয়ায় ঝিল গড়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সাড়ে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়াও বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দফার কাজ মার্চের মধ্যে শেষ করে মিথিলা মৌজায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী চপারে চেপে কলকাতা রওনা দেন। তার আগে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল সরকার, সুখেন বিদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শেখর রাউত এবং বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপার সঙ্গে দেখা করে কিছুক্ষণ বৈঠক করেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অরূপ চক্রবর্তীকে বাঁকুড়া সদর মহকুমা, অরূপ খাঁ-র সঙ্গে শুভাশিস বটব্যালকে জঙ্গলমহল এবং মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে বিষ্ণুপুর মহকুমায় দলীয় কাজকর্ম দেখতে বলে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলার পাত্রসায়র, গঙ্গাজলঘাটি, রাইপুরের মতো একাধিক ব্লকে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল মাথা চাড়া দিয়েছে। জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে শাসক দলের একাংশ নিজেদের প্রধান বা সভাপতির বিরুদ্ধেই অনাস্থা এনেছেন। জেলার নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলকে জেরবার হতে দেখেও সে ভাবে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকেও এই দ্বন্দ্বের কথা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে জেলা নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি।

দলেরই একাংশের মতে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলকে একটা সুনির্দিষ্ট রাস্তায় পরিচালনা করার লক্ষ্যেই এ বার জেলা সভাপতির সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েক জন নেতাকে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সভাপতি অরূপবাবু অবশ্য বিষয়টি তেমন কিছু নয় বলেই দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা সবাই মিলেই সংগঠন দেখাশোনা করে থাকি। দলনেত্রী আরও গুরুত্ব দিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে সবাইকে সংগঠন দেখাশোনা করতে বলে গেছেন।” যদিও তৃণমূলেরই এক জেলা নেতার বক্তব্য, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে বাগে আনতে পারছেন না দেখেই জেলা সভাপতির সঙ্গে আরও কয়েক জনকে জুড়ে দিয়েছেন আমাদের নেত্রী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura mamata bandopadhay meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE